—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিড়ি মহল্লা থেকে সিপিএম জেলা কমিটিতে স্থান হল না এক জনেরও। অথচ আগে বিড়ি মহল্লা সুতির দু’টি ব্লক থেকে জেলা কমিটিতে দু’জন সদস্য ছিলেন।ফলে দলগত ভাবে বিড়ি মহল্লার হয়ে সমস্যা তুলে ধরার ক্ষেত্রে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও নেতৃত্ব রইলেন না সিপিএমের।
সিপিএমের রাজ্য স্তরে বেশ কিছু তরুণ নেতাকে সামনে আনা হয়েছে তাই নয়, তাঁদেরকে সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদেও বসানো হয়েছে যাতে তাঁদের দেখে, তাঁদের বক্তব্য শুনে গ্রামগঞ্জ থেকে তরুণেরা এগিয়ে আসেন। টিভির সমস্ত টক শো-তেও বসানো হচ্ছে তরুণদেরই। কিন্তু শাখা ও এরিয়া কমিটির স্তরে তরুণদের সংগঠনে টেনে আনা যাচ্ছে না। যেমন জেলা কমিটিতে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন সদস্যকে আনা গিয়েছে।
মুর্শিদাবাদে সিপিএমের ৮০৩টি শাখা কমিটি রয়েছে। সম্মেলনের পর ৪০-৪৫ শতাংশ শাখা কমিটিতে সম্পাদক হিসেবে নতুন মুখ এসেছে। তবে এরিয়া কমিটি সদস্য পদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রয়ে গিয়েছেন পুরনোরাই। জেলায় ৪৩টি এরিয়া কমিটি ছিল। এ বারে সম্মেলনে তা বেড়ে হয়েছে ৪৭টি। এর মধ্যে ৩৬টি এরিয়া কমিটিতে সম্পাদক হিসেবে নতুন মুখ আনা হয়েছে।
নতুনদের মধ্যে এক জন মহিলাও এরিয়া কমিটির সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নাম কৃপালিনী ঘোষ। বহরমপুর পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
৫ জন এরিয়ার কমিটির সম্পাদকের বয়স ৪০ বছরের নীচে। ৩০ জন এরিয়া কমিটির সম্পাদকের বয়স ৫০ বছরের মধ্যে। ৩৬ জন এরিয়া কমিটির সম্পাদকের বয়স ৫০ বছরের উপরে।
অরঙ্গাবাদ এরিয়া কমিটির সম্পাদক ছিলেন ৬০ ছুঁই ছুঁই জুলফিকার আলি।এ বারে সেখানে এসেছেন বছর ৪০ বয়সের সামিউল হক। এঁর অধীনে রয়েছে ১১টি শাখা কমিটি। কিন্তু নতুন সম্পাদক এসেছে মাত্র তিনটিতে। শাখা ও এরিয়া দু’টি কমিটিতেই সাধারণ সদস্য পদে সে ভাবে পরিবর্তন আসেনি।
বিদায়ী এরিয়া কমিটির সম্পাদক জুলফিকার আলি বলেন, “গ্রামে-গঞ্জে তরুণদের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ যেমন আছে, তেমন কিছু পাওয়ার লোভও আছে। তাঁরা বাম রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে অনেকেই চান না। এই মুহূর্তে কলেজে রাজনীতি নেই। শাসক দলের দাপটের সঙ্গে পুলিশের মিথ্যে মামলার ভয়ে গ্রামাঞ্চলে তরুণরা রাজনীতিতে সরাসরি জড়াতে চাইছেন না। চেষ্টা হচ্ছে তরুণ বক্তাদের এনে তাঁদের আশ্বস্ত করার। তবে বিড়ি মহল্লা নিয়ে নিশ্চয় জেলার নেতারা ভাবছেন।”
বিদায়ী জেলা কমিটির সদস্য ৭০ বছরের সুতির অসিত দাস এ বার জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। এরিয়া কমিটির সম্পাদক ছিলেন তিনি। বাদ পড়েছেন সেখান থেকেও।
তাঁর জায়গায় এরিয়া কমিটিতে এসেছেন নবাগত প্রশান্ত দাস, যিনি সিটুরও ব্লক সম্পাদক। কিন্তু কাউকেই রাখা হয়নি জেলা কমিটিতে। ১০টি শাখা কমিটির মধ্যে সম্পাদক পরিবর্তন ঘটেছে ৪টিতে।
অসিতবাবু বলছেন, “এরিয়া কমিটিতে আমাদের গড় বয়স ৪২। বিড়ি মহল্লায় জেলা কমিটির সদস্য এখন না থাকলেও রাজ্য সম্মেলনের পর অবশ্যই আসবে।”