রানাঘাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক চিকিৎসক মুকুটমণি অধিকারী। Sourced by the ABP
'প্রগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন' নামে সদ্য আত্মপ্রকাশ করেছে তৃণমূলপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন। রাজ্যের মন্ত্রী তথা চিকিৎসক-বিধায়ক শশী পাঁজার নেতৃত্বাধীন এই সংগঠনের লক্ষ্য রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুফল প্রান্তিক এলাকায় পৌঁছে দেওয়া।
সেই কমিটিতে রাজ্য জুড়েই একাধিক সরকারি ছোট-বড় হাসপাতালের চিকিৎসকদের যেমন স্থান হয়েছে, তেমনই রয়েছেন তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক এবং সাংসদও। অথচ কমিটিতে ঠাঁই পাননি রানাঘাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক চিকিৎসক মুকুটমণি অধিকারী। প্রত্যাশিত ভাবেই, বিষয়টি নিয়ে জেলার রাজনীতিতে চর্চা শুরু হয়েছে।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন মুকুটমণি। যদিও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। তবে রানাঘাট কেন্দ্রে লোকসভা ভোটের টিকিট না পেয়ে নির্বাচনের মুখেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপির জগন্নাথ সরকারের বিপক্ষে মুকুটকেই প্রার্থী করে তৃণমূল। যদিও তাতেও শিকে ছেঁড়েনি। ২০২৪ সালে নিজের ছেড়ে যাওয়া আসন রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে ফের তিনি বিধানসভায় ফেরেন।
মুকুটমণি চিকিৎসক তো বটেই, একই সঙ্গে এক জন পরিচিত মতুয়া-মুখও বটে। ফলে দিনের পর দিন শাসক দল তৃণমূলের অধরা মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক মুকুটের হাত ধরেই ঝুলিতে আসবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে দলের নিচুতলার কর্মীদের। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা বিজেপি-প্রভাবিত রানাঘাট মহকুমায় তিনি রাজনৈতিক ‘ফ্যাক্টর’ হতে পারেন বলেও দাবি তৃণমূলের ওই অংশের।
কিন্তু তৃণমূলপন্থী চিকিৎসক সংগঠনে মুকুটের নাম না থাকা সকলকেই কিছুটা অপ্রস্তুত করে দিয়েছে। তালিকায় নজর দিলেই দেখা যাবে, বর্তমানে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি নন এমন চিকিৎসকেরও ওই কমিটিতে স্থান হয়েছে। উল্লেখযোগ্য নাম হুগলির পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ। আবার কমিটিতে রয়েছেন নির্মল মাজি, রানা চট্টোপাধ্যায়, তাপস চক্রবর্তীদের মতো চিকিৎসক বিধায়কেরাও। ব্রাত্য শুধু মুকুটই। তা হলে কি বছর ঘুরতেই তিনি তৃণমূলের সংসারে ওজন হারিয়েছেন?
মুকুটমণি নিজে অবশ্য 'ধরি মাছ, না ছুঁই পানি' গোছের মন্তব্য করেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, "ওই কমিটি ঠিক কী, আমি তা নিজেও ভাল মতো জানিনা। তবে দল যা ঠিক বলে মনে করেছে, তা-ই হয়েছে।" এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক তথা কল্যাণী গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক জয়া মজুমদার বলেন, "আমি কোনও মন্তব্য করব না। যা বলার সংগঠনের সভাপতি শশী পাঁজা বলবেন।"
ওই সংগঠনের সম্পাদক শিক্ষক-চিকিৎসক তথা বীরভূমের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করবী বড়ালকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি, মোবাইল বার্তার জবাবও দেননি।