coronavirus

Coronavirus in West Bengal: উপ-নির্বাচন বলেই ঝাঁপ? ৫৪ হাজার টিকা মোটে তিন দিনে!

শনি থেকে সোমবার— এই তিন দিনে শান্তিপুরের গ্রাম ও শহরাঞ্চল মিলিয়ে মোট ৫৪ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। 

Advertisement
সম্রাট চন্দ
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২১ ০৬:২০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিধানসভার উপ-নির্বাচন কবে হবে তা এখনও অজানা। কিন্তু এরই মধ্যে শান্তিপুরে করোনা টিকাকরণের বড় আয়োজন করল স্বাস্থ্য দফতর। শনি থেকে সোমবার— এই তিন দিনে শান্তিপুরের গ্রাম ও শহরাঞ্চল মিলিয়ে মোট ৫৪ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

নদিয়া জেলার অন্যত্র অবশ্য এত বড় আকারে টিকাকরণের আয়োজন হয়নি। ফলে অনিবার্য ভাবেই প্রশ্ন উঠছে: শান্তিপুর কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হবে বলেই কি এই আয়োজন? তবে প্রশাসনের কর্তারা তা মানতে রাজি নন। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, টিকাকরণের এই ‘মেগা’ ব্যবস্থা অন্যত্রও হবে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, শান্তিপুর ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ২৪ ওয়ার্ডবিশিষ্ট পুর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য মোট ১৪টি শিবির করা হয়েছে। প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে এবং ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’টি শিবির হয়েছে। শান্তিপুর শহরে রয়েছে তিনটি কেন্দ্র। গ্রামীণ এলাকায় দৈনিক ১৩ হাজার ২০০ জন করে তিনদিনে মোট ৩৯ হাজার ৬০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আবার পুর এলাকায় দৈনিক চার হাজার ৮০০ জন করে তিন দিনে মোট ১৪ হাজার ৪০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য দেড়শোরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। জেলার একটি নির্দিষ্ট এলাকায় এত বড় আকারে টিকাকরণের উদ্যোগ আগে কখনও হয়নি।

Advertisement

এ দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন শিবিরের সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে। গ্রামীণ শান্তিপুরের ১১টি কেন্দ্রে গড়ে দৈনিক ১২০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আবার শান্তিপুরের এম এন হাইস্কুল এবং মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের শিবিরে এক-একটিতে দৈনিক ১৮০০ জনকে এবং শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে দৈনিক ১২০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে শান্তিপুর আসনে জিতেও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। আসনটি এখন শূন্য। উপ-নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। রাজ্যের সাতটি আসনে দ্রুত উপনির্বাচন চেয়ে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। শান্তিপুর ব্লকের ১০টির মধ্যে ছ‘টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। আর রয়েছে শান্তিপুর পুর এলাকা। টিকাকরণ শিবির অবশ্য গোটা এলাকা জুড়েই হচ্ছে। তবে এই আয়োজনের জন্য শান্তিপুরকে বেছে নেওয়ার পিছনে উপনির্বাচনের গন্ধই পাচ্ছেন অনেকে।

বিজেপি সাংসদ জগন্নাথের দাবি, “মানুষ টিকা পেলে তো ভালই। কিন্তু তৃণমূলের সরকার এ নিয়ে রাজনীতি করছে। শুধু মাত্র উপ-নির্বাচন যেখানে সেখানেই কেন, কেন অন্যত্রও বেশি মানুষের টিকার ব্যবস্থা হচ্ছে না? কেন্দ্রের দেওয়া টিকার হিসাব দিচ্ছে না রাজ্য। আর এখন উপনির্বাচনকে সামনে রেখে তারা এই টিকার ফায়দা তুলতে চাইছে।”
নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূলের রিক্তা কুণ্ডু পাল্টা বলেন, “বেশি মানুষ যাতে টিকা পায়, সেই জন্যই এই উদ্যোগ। বিজেপি মানুষের কাজ না করে মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করে। আর কেউ মানুষের জন্য কাজ করলে সেখানেও রাজনীতি করে বাধা দেয়।”
জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, “জেলায় প্রতি দিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টিকাকরণ হচ্ছে, টিকার জোগানের উপর নির্ভর করে।” তাঁর দাবি, “এত সংখ্যায় টিকাকরণ নতুন কিছু নয়, এর সঙ্গে উপ-নির্বাচনের কোনও যোগ নেই।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপনকুমার দাসও বলেন, “জেলার অন্যত্রও এই ধরনের শিবির করা হবে। এর সঙ্গে উপ-নির্বাচনের যোগ নেই।”

আরও পড়ুন
Advertisement