—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
জাল পাসপোর্ট করার অভিযোগে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে বহরমপুর থেকে ১১ জনকে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। ধৃতদের মধ্যে তিন জন ছিল বাংলাদেশি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ভারতীয়দের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ডে বাংলাদেশিদের ছবি বসিয়ে বহরমপুরের রাধিকানগরে থাকা ‘পাসপোর্ট পরিষেবা কেন্দ্র’ থেকে জাল পাসপোর্ট তৈরির। সেই ঘটনার পর নতুন করে এমন অভিযোগে বহরমপুর থেকে কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে পাসপোর্ট ও আধার কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে জনা দশেকের বিরুদ্ধে এনআইএ বা অন্য রাজ্যের পুলিশ গত তিন বছরে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে বলে
জানা গিয়েছে।
এরই মধ্যে সদ্য মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় বেঙ্গল এসটিএফ এবং অসম পুলিশের এসটিএফের হাতে জঙ্গি সন্দেহে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। তারপরই পাসপোর্টে জালিয়াতি চক্রের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। তাহলে কি নজরদারির ফাঁক গলে পুনরায় পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি হচ্ছে এই জেলায়!
প্রশ্ন উঠছেই।
অনেকেরই অভিযোগ, বহরমপুরের রাধিকানগরে থাকা পাসপোর্ট কেন্দ্রকে ঘিরে দালালচক্র সক্রিয় রয়েছে বহু দিন ধরে। সেখানে অনলাইনের দোকানের আড়ালে দালালচক্র সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই দালালচক্র ভাঙতেই তদন্তের দাবি উঠেছে।
তবে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘পাসপোর্ট বিদেশ মন্ত্রক দেয়। এ ক্ষেত্রে ওরা পুলিশি যাচাই (ভেরিফিকেশন) করতে দেয়। পুলিশ ভেরিফিকেশনও হয়। এক্ষেত্রে আমাদের আলাদা করে দেখার কিছু থাকে না।’’ তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পাসপোর্ট অফিস থেকে তাঁদের কাছে তথ্য যাচাইয়ের জন্য যা পাঠানো হয়, তার প্রত্যেকটি আবেদনই যাচাই করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত তিন বছরে কেরল, অসম এবং তামিলনাড়ু থেকে এনআইএ বা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ অন্তত ১০ জনের ক্ষেত্রে তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ওই ব্যক্তিরা বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট রয়েছে। তবে তাদের ভারতীয় পাসপোর্টও রয়েছে। আধার কার্ডেও মুর্শিদাবাদের ঠিকানা। তাদের আধার কার্ড বাতিলের জন্য নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাশাপাশি সেই কপি এনআইএ বা সে রাজ্যের পুলিশ মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফেও সেই ১০ জনের আধার কার্ড বাতিলের জন্য আধার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
তবে বহরমপুরের এক যুবক বলেন, ‘‘পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ ছাড়া পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি করা অসম্ভব। তাই সর্ষের মধ্যে থেকে ভূত খুঁজে বের করতে হবে। তবেই এই চক্র ভাঙা সম্ভব হবে।’’