Sagardighi Assembly Bypoll

সাগরদিঘিতে প্রার্থী কে, জল্পনা শুরু

নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা আঁচ করে সোমবার সাগরদিঘির ধুমারপাহাড়ে দলের জঙ্গিপুরের সভাপতি ও চেয়াম্যানকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়ে যান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
বিমান হাজরা
সাগরদিঘি (ইংরেজবাজার) শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৬
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিধায়ক সুব্রত সাহার মৃত্যুর তিন সপ্তাহের মধ্যে সাগরদিঘি বিধানসভায় উপনির্বাচন ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার এই উপনির্বাচনের দিন স্থির হয়েছে। ২ মার্চ হবে ভোট গণনা। মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিন ৭ ফেব্রুয়ারি।

তৃণমূল ও বিজেপি ছাড়াও সিপিএম ও কংগ্রেসও জানিয়ে দিয়েছে,তারা পৃথক ভাবে প্রার্থী দেবে সাগরদিঘিতে।তবে এত তড়িঘড়ি উপনির্বাচন ঘোষণা করায় কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়বে বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এই মুহূর্তে ভারত জোড়ো যাত্রায় উত্তরবঙ্গে। ২৩ জানুয়ারি সে যাত্রা শেষ হওয়ার কথা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা ও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাগরদিঘির জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে রাজনৈতিক সম্মেলনে বেঙ্গালুরুতে রয়েছেন। জামির জেলায় ফিরবেন ২৩ জানুয়ারি, জ্যোতিরূপ ২৫ জানুয়ারি। তবে দু’জনেই বেঙ্গালুরু থেকে জানিয়ে দিয়েছেন সাগরদিঘিতে পৃথক প্রার্থী দেবে দল। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, “২৩ জানুয়ারি পদযাত্রা শেষ করে জেলায় ফিরবেন অধীর চৌধুরী। তারপরেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে। তবে সাগরদিঘিতে কংগ্রেস এ বারেও প্রার্থী দেবে।”

Advertisement

তবে সাগরদিঘির এই উপনির্বাচনে অনেকটাই নিরাপদ তৃণমূল। নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা আঁচ করে সোমবার সাগরদিঘির ধুমারপাহাড়ে দলের জঙ্গিপুরের সভাপতি ও চেয়াম্যানকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়ে যান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো ভোটের প্রস্তুতির মহড়ায় ২৪ জানুয়ারি সাগরদিঘিতে প্রয়াত মন্ত্রী ও সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহার স্মরণ সভা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূলের জঙ্গিপুর জেলা কমিটি।দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে বহু বিরোধিতা সত্ত্বেও সুব্রত পর পর তিন বার তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী হয়েছেন সাগরদিঘিতে। প্রতিবারই অবশ্য রব উঠেছে তিনি হারছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছে তিনিই। তাই প্রার্থী যিনিই হোন, সাগরদিঘিতে সুব্রত সাহার ভাবমূর্তিকে সামনে রেখেই এবারের নির্বাচন লড়তে চান জঙ্গিপুরের জেলা তৃণমূলের নেতারা।

শাসক দল তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল সাগরদিঘিতে নতুন কিছু নয়। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বেরাজুল ইসলাম দাবি করেছেন, তাঁরা স্থানীয় কোনও দলীয় নেতাকে প্রার্থী চান এ বারে। আবার সুব্রত অনুগামীরা দাবি করেছেন তাঁর পরিবারের কাউকে প্রার্থী করলে সহানুভূতির হাওয়ায় জয়টা সহজ হবে।তৃণমূলের নেতা কানাইচন্দ্র মণ্ডল অবশ্য বলেন, “প্রার্থী নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। রাজ্য থেকেই বাছাই হবে প্রার্থীর নাম। তবে প্রার্থী যিনিই হোন দলীয় কর্মীদের বুধবারই বলে দেওয়া হয়েছে, প্রতীক দিয়ে দেওয়াল লেখা শুরু করতে।”

দলের অন্দরে এ পর্যন্ত যা ইঙ্গিত তাতে সাগরদিঘির নিশ্চিত আসনে বহিরাগত কাউকেই প্রার্থী করবে তৃণমূল। এমনও হতে পারে রাজ্য পর্যায়ের কোনও নেতাকে প্রার্থী করে পাঠানো হতে পারে সাগরদিঘিতে। একই কথা বলেন দলের উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক খলিলুর রহমানও। খলিলুর বলেন, ‘‘আমাদের কলকাতায় ডাকা হবে বলে জানানো হয়েছে। আমাদের মতামত জানতে চাইলে যা বলার বলব। তবে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা দিদিই নেবেন।’’

বিজেপির মাফুজা খাতুনেরই এ বারেও সংখ্যালঘু মুখ হিসেবে প্রার্থী হওয়ারর সম্ভাবনা বেশি। বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের রাজ্য পর্যবেক্ষক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ রাজ্যে উপনির্বাচন মানেই তো প্রহসন। তবু বিজেপি তার সাধ্য মতো ক্ষমতা দিয়ে লড়বে সাগরদিঘিতে। ২১ জানুয়ারি রাজ্য কমিটির সভা রয়েছে। সেখানেই সাগরদিঘির প্রার্থী নিয়ে আলোচনা হবে।” ২০২১ সালের নির্বাচনে সাগরদিঘিতে ৫০.৯৫ শতাংশ ভোট পেয়ে সুব্রতবাবু জিতলেও ২৪.০৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপির মাফুজা।

আরও পড়ুন
Advertisement