প্রতীকী ছবি।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদ শূন্য হতে কে সেই পদে বসবেন তা নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘ বেশ কয়েক মাস ধরে সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতির আসন দু’টি খালি পড়ে রয়েছে। এখনও ওই দুই পদ কাদের দেওয়া হবে, তা নিয়ে দ্বিধা কাটেনি তৃণমূল নেতৃত্বের।
জেলা পরিষদের তিন কর্মাধ্যক্ষ শাহনাজ বেগম, রাজীব হোসেন থেকে শুরু করে শামসুজ্জোহা বিশ্বাস, জেলা পরিষদের দলনেতা তজিমুদ্দিন খানের নাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে দলের অন্দরে ঘোরাফিরা করছিল। কিন্তু সম্প্রতি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা ডিরেক্টর পদে নিয়োজিত হয়েছেন। অন্যদিকে দলের সাংগঠনিক ভাবে জেলা দুই ভাগ হওয়ার পর একভাগের দলের মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী হিসেবে স্বপদে থেকে গিয়েছেন কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শাহনাজ বেগমও। এরপরে তাঁদের দু’জনকে নিয়ে দলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাহলে কী সভাধিপতির দৌড় থেকে ছিটকে পড়লেন রাজীব হোসেন ও শাহনাজ বেগম এমন গুঞ্জনও চলছে।
তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহে কলকাতা যাব। সভাধিপতি নির্বাচন নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বে জানতে চাইলে মতামত জানাব।’’ পদ প্রাপ্তির জন্য রাজীব হোসেন, শাহনাজ বেগম কী সভাধিপতির দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন? তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর— ‘‘দেখুন কী হয়।’’
তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাওনি সিংহরায় বলেন, ‘‘কাকে কোন পদ দেবে তা রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব ঠিক করে। এটা আমার এক্তিয়ারে পড়ে না।’’
জেলা তৃণমূলের এক নেতা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে শাহনাজ বেগম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। তিনি দলের জেলার সভানেত্রী পদে ছিলেন। এবারে এক নেতা, এক পদের তত্ত্ব উঠতে শুরু করতেই শাহনাজ মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী থাকবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা ছিল। শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, জেলাকে সাংগঠনিক ভাবে দুটি ভাগে ভাগ করার পরে শাহনাজকে বহমপুর-মুর্শিদাবাদের জোনের মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী রেখে দিয়েছে দল। রাজীব হোসেনও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার রাজ্যস্তরের পদে পেয়েছেন। ফলে তাঁরা কী সভাধিপতির দৌড় থেকে ছিটকে গেলেন সেই জল্পনা উঠতে শুরু করেছে। দলের এক নেতা বলছেন, ‘‘সভাধিপতির দৌড় থেকে তাঁদের দূরে রাখতে এমন পদ দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’
এবিষয়ে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা পরিষদের কৃষি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ তথা বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সদ্য নিযুক্ত মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাহনাজ বেগম বলেন, ‘‘দল যখন যে কাজে আমাকে লাগাবে সেই কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। কর্মাধ্যক্ষ ও মহিলা সভানেত্রী হিসেবেও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছি।’’
এর আগে সভাধিপতি নির্বাচনের দিন ঠিক হতেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি হতে চেয়ে ৬ জন জেলা পরিষদের সদস্য দলের কাছে বায়োডেটা জমা দিয়েছিলেন। এছাড়া আরও ১৪ জন বায়োডেটা জমা দিলেও কোনও পদের জন্য তা উল্লেখ করেছিলেন না। তবে করোনা সুরক্ষাবিধির জেরে সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি পদে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। ফলে সব কিছু থমকে যায়। ফের জেলাকে সাংগঠনিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করে সভাপতিসহ শাখা সংগঠনের বিভিন্ন পদে নিয়োগ করার পরে নতুন করে সভাধিপতি পদ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।