Service Road of Ranaghat

সঙ্কীর্ণ সার্ভিস রোড, ছাড়া হয়নি নির্দিষ্ট জমি

রানাঘাট শহরকে পূর্ব-পশ্চিমে দ্বিখণ্ডিত করেছে জাতীয় সড়ক। শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সড়কে রয়েছে দু’টি উড়ালপুল ও একটি সেতু।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩০
রানাঘাটে জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোডের পাশে রাখা হয়নি ফাঁকা জায়গা।

রানাঘাটে জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোডের পাশে রাখা হয়নি ফাঁকা জায়গা। ছবি: সুদেব দাস।

রানাঘাটে সম্প্রসারিত জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড এবং বাসিন্দাদের দোকান বা বাড়ির মধ্যে রাখা নেই নির্দিষ্ট ফাঁকা জায়গা। ফলে, ভারী বৃষ্টিতে সম্প্রসারিত সড়কের দুই দিকে পুরসভা এলাকায় নিকাশি সমস্যা চরম আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা। এমনকি, সার্ভিস রোডে দিয়ে চলাচলকারী পণ্যবাহী বড় গাড়ি কোনও ভাবে নিয়ন্ত্রণ হারালেও সরাসরি বাসিন্দাদের বাড়িতে ঢুকে যাওয়ার শঙ্কা রয়ে গিয়েছে। নিয়ম না মেনে সড়ক সম্প্রসারণের এই কাজে ক্ষুব্ধ রানাঘাট পুরসভা কর্তৃপক্ষ। সড়ক কর্তৃপক্ষের পাল্টা যুক্তি— জমি মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে কম জায়গা দিয়েই সার্ভিস রোড করতে হয়েছে।

Advertisement

রানাঘাট শহরকে পূর্ব-পশ্চিমে দ্বিখণ্ডিত করেছে জাতীয় সড়ক। শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া সড়কে রয়েছে দু’টি উড়ালপুল ও একটি সেতু। এ ছাড়া উড়ালপুল ও সেতু থেকে শহরে যাতায়াতের জন্য করা হয়েছে সার্ভিস রোড। কিন্তু ওই সার্ভিস রোড এতটাই সঙ্কীর্ণ যে, একটা বড় গাড়ি চলাচল করলে পথচারীদের যাতায়াতের কোনও জায়গা থাকে না। সার্ভিস রোডের পাশে জাতীয় সড়কের জায়গা যেখানে শেষ হচ্ছে, সেখানেই শুরু হয়ে যাচ্ছে ব্যক্তিগত মালিকানার জায়গা।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, শহর এলাকায় বর্তমানে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ করতে গেলে অন্তত চার ফুট জায়গা ছাড়তে হয়। জাতীয় সড়কের ক্ষেত্রে এই জায়গার পরিমাণ কমপক্ষে ১৫ ফুট। নির্দিষ্ট এই জায়গাকে 'সেটব্যাক লাইন' বলা হয়। অথচ, নির্দিষ্ট পরিমাণ সেই জায়গা অধিগ্রহণ না করেই, কোনও মতে দায়সারা ভাবে জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড করা হয়েছে।

রানাঘাট পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রসারিত জাতীয় সড়ক ও সার্ভিস রোডের উচ্চতা শহরের রাস্তার তুলনায় অনেকটাই বেশি। ফলে, বৃষ্টি হলেই জাতীয় সড়কের জল শহরে ঢুকবে। সে ক্ষেত্রে সড়কের পাশ দিয়ে নতুন করে পুরসভার পক্ষে নিকাশি নালা করা সম্ভব নয়। কারণ, ওই নালা করতে হলে বাসিন্দাদের বাড়ি-ঘরের ভিতর দিয়ে করতে হবে। যেটা বাস্তবে সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ভুলের জন্য এখন আমাদের সারা বছর মাসুল গুনতে হবে। সার্ভিস রোডের এমন অবস্থা যে, কোনও গাড়ি বিকল হয়ে গেলে অবরুদ্ধ থাকবে সড়ক। সে ক্ষেত্রে শহরের মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।’’

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য জায়গায় সার্ভিস রোডের জন্য অন্তত ৬০ মিটার জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। অথচ, রানাঘাটের ক্ষেত্রে সেই জমি অধিগ্রহণের করা হয়েছে ৪৫ মিটার। কেন এমনটা হল? সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের নদিয়া জেলা আধিকারিক রাজু কুমার বলেন, ‘‘রানাঘাট শহরের ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের সময়ে পর্যাপ্ত জমি মেলেনি। জমি দিতে চাননি এলাকার মানুষ। যে কারণেই কম জায়গার মধ্যে দিয়েই ওই সার্ভিস রোড করা হয়েছে।’’

যদিও সড়কের পাশে থাকা বাসিন্দাদের দাবি, ‘‘সড়ক কর্তৃপক্ষ যে পরিমাণ জমি চেয়েছেন, আমরা তাই দিয়েছি। ওঁদের পরিকল্পনাতেই ভুল ছিল। যে কারণে এখন আমাদের উপরে দোষ চাপাচ্ছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement