প্রধান সমরেন্দ্র স্বর। নিজস্ব চিত্র।
ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে গিয়ে শাসক দল তৃণমূলের প্রধানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে দলের পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ভরতপুর ২ ব্লকের টেঁয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনায় জখম তৃণমূল প্রধান সমরেন্দ্র স্বরের কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
আজ বুধবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধাইপুর গ্রামে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প আছে। ওই ক্যাম্পে সরকারি কয়েকটি প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য প্রধানের শংসাপত্রের প্রয়োজন। কিন্তু অভিযোগ, প্রধান ওই শংসাপত্র না দিয়ে সাধারণ বাসিন্দাদের হেনস্থা করছেন। যদিও এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন প্রধান সমরেন্দ্র স্বর। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ উঠেছে, সমরেন্দ্র স্বরকে পঞ্চায়েতের ফাঁকা শংসাপত্রে সই করে দেওয়ার কথা জানায় উপ-প্রধান তৃণমূলের তহমিনা বিবির স্বামী আলিম মোল্লা-সহ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েক জন সদস্য ও এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। কিন্তু প্রধান ফাঁকা শংসাপত্রে সই করতে রাজি হয়নি। প্রথমে বচসা শুরু হয়। পরে প্রধানকে এলোপাথাড়ি চড়, লাথি, ঘুষি মারা হয় বলে অভিযোগ। প্রধান মাটিতে পড়ে যান। সেই সময় অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তৃণমূলের প্রধান সমরেন্দ্র স্বর বলেন, “সব সময় পঞ্চায়েতের আইনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। এটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আমি ওই আইনের বিরুদ্ধে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় আমাকে আলিম মোল্লার নেতৃত্বে পঞ্চায়েত সদস্য সাদেক শেখ, তপন শেখ, বিশ্বজিৎ বাড়িক, দয়াময় রাজবংশী-সহ অনেকেই আমাকে মারধর করে।” ঘটনার খবর পেয়ে প্রধানের অনুগামীরা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে পৌঁছে প্রধানকে উদ্ধার করে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত আলিম মোল্লা বলেন, “আমরা তৃণমূল করি। কিন্তু প্রধান নিজেও তৃণমূল, তার পরেও গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত সুবিধা কংগ্রেস ও বিজেপির লোকজনরা আগে পাচ্ছে। উনি শংসাপত্র দিচ্ছেন না। সেটাই বলতে গিয়েছিলাম।”
বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই প্রধান দল বিরুদ্ধ কাজ করেছেন। ওঁকে কেউ মারধর করেনি। সম্পূর্ণ নাটক করছেন। প্রধানের পদে বসে কেউ উন্নয়নের বিষয়ে দল করতে পারেন না।”