Migrant laborer

কেরলের হাসপাতালে ভর্তি একমাত্র রোজগেরে সদস্য, দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকের বাড়ি এল ৭ লক্ষের বিল!

কেরলে নির্মীয়মাণ বহুতলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে পড়ে যান আজিজ়ুর। তার পর থেকে তাঁর চিকিৎসা চলছে কেরলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে বিল দেখে হতবাক পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
হরিহরপাড়া (মুর্শিদাবাদ) শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:২৬
অকূলপাথারে পরিবার।

অকূলপাথারে পরিবার। — নিজস্ব চিত্র।

কেরলে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়ে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল থেকে নীচে পড়ে গুরুতর জখম হন এক পরিযায়ী শ্রমিক। একমাত্র রোজগেরে সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হওয়ায় অন্নসঙ্কটের মুখে পড়েছে পরিবার। এহ বাহ্য, এর মধ্যে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকার বিল চলে এল মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে। বিল শোধ না করলে চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়ার কথাও তাতে জানানো হয়েছে। বিলের চিঠি হাতে পেয়ে অথৈ জলে গোটা পরিবার। কোথা থেকে আসবে টাকা, ভেবে পাচ্ছে না হতদরিদ্র পরিবারটি। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সাংসদ। আবেদন এলে খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে প্রশাসনও।

Advertisement

পরিবার সূত্রে খবর, মাসচারেক আগে হরিহরপাড়ার আব্দুলপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজ়ুর শেখ কেরলে রাজমিস্ত্রির কাছ করতে গিয়েছিলেন। গত ১ নভেম্বর একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির তিন তলায় কাজ করছিলেন তিনি। সেখান থেকে আচমকাই পা পিছলে পড়ে যান আজিজ়ুর। প্রাণ বাঁচলেও গুরুতর ভাবে আহত হন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুকের এক দিকে এবং শিরদাঁড়ার হাড় ভেঙেছে আজিজ়ুরের। মাথাতেও রয়েছে আঘাত।

ঘটনার পরেই নির্মীয়মাণ বাড়িটির মালিক আজিজ়ুরকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় কেরলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন আজিজ়ুরকে। ওই হাসপাতালেই বর্তমানে চিকিৎসা চলছে তাঁর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কয়েক দিন আগে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকার বিল পাঠিয়েছে আজিজ়ুরের আদিবাড়ি মুর্শিদাবাদে। আর তাতেই অকূলপাথারে পড়েছে পরিবারটি। একমাত্র রোজগেরে সদস্য হাসপাতালে ভর্তি থাকায় আয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার উপর হাসপাতালের আকাশছোঁয়া বিল— কী করে মেটাবেন তা নিয়ে ভাবতেই এখন বেলা যাচ্ছে দিন-আনি-দিন-খাই পরিবারটির। এই পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। গ্রামের মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও এত টাকা জোগাড় হচ্ছে না। অগত্যা, প্রশাসনের সহযোগিতা চাইছে পরিবারটি।

পরিবারের সদস্য রমজান মণ্ডল বলেন, ‘‘এত টাকা বিল আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। কেরলের মালিক কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার দায় অস্বীকার করছেন। একমাত্র ভরসা প্রশাসন। রাজ্য সরকার যদি সাহায্য করে তবে হয়তো ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে পারব। আমাদের নিজেদের এত ক্ষমতা নেই।’’

মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মৈত্র বলেন, ‘‘পরিবারটির তরফে এখনও আমাদের সে ভাবে কিছু জানানো হয়নি। পরিবার আবেদন জানালে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। আমাদের পক্ষ থেকে মানবিক ভাবে সমস্যাটি যতটা দেখা সম্ভব, দেখা হবে। দলীয় ভাবেও পরিবারের পাশে আছি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement