Ratha Yatra

ISCKON Temple: ভক্তের ভিড় নেই, জৌলুসহীন রথ ইস্কনে

সোমবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হাতেগোনা পূজারী এবং অল্প কিছু মানুষের উপস্থিতিতে বেলা সাড়ে এগারোটার মধ্যেই নিয়মরক্ষার রথযাত্রা পর্ব সম্পূর্ণ হয়ে যায় মায়াপুরে।

Advertisement
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২১ ০৬:৫০
ভক্তেরা নেই । তাই পুলিশ ও নিরাপত্তরক্ষীরাই ঠেলে নিয়ে গেল ইস্কনের রথ। সোমবার মায়াপুরে। নিজস্ব চিত্র

ভক্তেরা নেই । তাই পুলিশ ও নিরাপত্তরক্ষীরাই ঠেলে নিয়ে গেল ইস্কনের রথ। সোমবার মায়াপুরে। নিজস্ব চিত্র

খেয়াঘাট থেকে বাসস্টপ— সর্বত্র লাগানো হয়েছিল বড়-বড় ফ্লেক্স। তাতে জানানো হয়েছিল, ১২ জুলাই সোমবার রথযাত্রা এবং ২০ জুলাই মঙ্গলবার উল্টোরথ উপলক্ষে ইস্কন ক্যাম্পাসের সমস্ত গেট সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে! রথের সময় যা আগে ভাবাই যেত না। ভক্তসমাগমে এক সপ্তাহ আগে থেকেই জমজমাট হয়ে উঠত মায়াপুর। করোনার জেরে এই নিয়ে পর-পর দু বছর সেখানে নিয়ন্ত্রিত ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে রথযাত্রা।

গতবছর রথের শোভাযাত্রা মন্দির চত্বরে করা সত্ত্বেও বেশ ভিড় জমেছিল। তার পরই মায়াপুরে হু-হু করে বেড়ে গিয়েছিল করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। তাই এ বছর কোনও ঝুঁকিই নিতে চাননি ইস্কন কর্তৃপক্ষ। আগে থেকে ফ্লেক্স ঝুলিয়ে, সমাজমাধ্যমে প্রচার চালিয়ে জানিয়েছিলেন, বাইরের ভক্তেরা ভিড় জমতে পারবেন না মন্দির চত্বরে।

Advertisement

সোমবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হাতেগোনা পূজারী এবং অল্প কিছু মানুষের উপস্থিতিতে বেলা সাড়ে এগারোটার মধ্যেই নিয়মরক্ষার রথযাত্রা পর্ব সম্পূর্ণ হয়ে যায় মায়াপুরে। ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিকগৌরাঙ্গ দাস বলেন, “এবার আমাদের স্বল্পতার রথ। স্বল্প সময়ে, স্বল্প মানুষের উপস্থিতিতে, স্বল্প পথে যাত্রা করে নিয়মরক্ষা করা হয়েছে। তবে রথে যা-যা করনীয় সে সবই নিখুঁতভাবে পালন করা হয়েছে। আর কঠোর ভাবে মানা হয়েছে কোভিড বিধি। সব মিলিয়ে ১৫০ জন উপস্থিত ছিলেন।” কিছু ক্ষণের জন্য এ দিন ইস্কনে এসেছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

মায়াপুরের সবর্ত্র এ দিন কঠোর নিরাপত্তা ছিল। খেয়া পারাপারের হুলোর ঘাট বা যানবাহনের প্রবেশপথ বামুনপুকুর মোড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ছিল পুলিশ প্রহরা। ইস্কনের সব ক’টি প্রবেশ পথ সকাল থেকেই বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাটে লোক চলাচল ছিল সামান্য।

হবিবপুর এ বার ইস্কনের রথ পঁচিশ বছরে পা দিল। কিন্তু করোনার জন্য কোনও বিশেষ উৎসব করা যায়নি। করোনার আগে পর্যন্ত জাতীয় সড়ক দিয়ে রথ টেনে নিয়ে যাওয়া হত। প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রানাঘাটের স্বাস্থ্যোন্নতি ময়দানে অস্থায়ী গুন্ডিচা মন্দিরে যেতেন জগন্নাথ দেব। উল্টোরথ পর্যন্ত মেলা বসত। প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষ ভিড় জমাতেন মেলায়। হবিবপুর ইস্কনের সেবক অকৃঞ্চন গোবিন্দ দাস বলেন, “করোনার কারণে সব বাতিল করা হয়েছে। খুব কম সংখ্যক ভক্ত এ দিন এসেছেন। তাঁদের মাস্ক পরে, দুরত্ব বাজায় রেখে প্রণাম সেরে চলে যেতে বলা হয়েছে।’’

মায়াপুরের সারস্বত গৌড়ীয় বৈষ্ণবসমাজের ভক্তিসাধন তৎপর মহারাজও বলছিলেন, “রথের দিন মায়াপুরের এমন নিঃসঙ্গ ছবি ভাল দেখতে লাগে না। কিন্তু অতিমারির কালে সাবধানতা অবলম্বন করা ছাড়া উপায়ও নেই।”

তথ্য সহায়তা—সৌমিত্র সিকদার

আরও পড়ুন
Advertisement