প্রতীকী ছবি।
পেট্রোপণ্য নিয়ে আন্দোলনেও চাপা রইল না শান্তিপুরে শাসকদলের দুই শিবিরের বিবাদ। রবিবার আলাদা করে শহরের মধ্যে দুই জায়গায় হল কর্মসূচি।
শনিবার এবং রবিবার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূলের তরফে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। শহর তৃণমূলের তরফে দুই দিন শান্তিপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ডাকঘর মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। এই কর্মসূচিতে অজয় ঘনিষ্ঠ প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য, প্রাক্তন কাউন্সিলারদের অনেককেই দেখা যায়নি। রবিবার এই শিবিরের নেতারাই পাল্টা কর্মসূচি নেন। ডাকঘর মোড় কিছুটা দূরেই বাইগাছি মোড়ে তাঁরা অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। সেখানে ছিলেন প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান আব্দুস সালাম কারিগর-সহ পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং একাধিক প্রাক্তন কাউন্সিলার। ছিলেন অজয় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অন্যরাও।
আবার ডাকঘর মোড়ে দলের শহর কমিটির ডাকা কর্মসূচিতে দলের শহর সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র, প্রাক্তন কাউন্সিলার তথা দলের শান্তিপুর শহরের সহ-সভাপতি সুব্রত ঘোষ-সহ অন্যরা হাজির ছিলেন। কারামন্ত্রী উজ্জল বিশ্বাসও যান দলের শহর কমিটির ডাকে এই কর্মসূচিতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, শান্তিপুরে দলের কোন্দল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিব্রত হতে হয়েছে তৃণমূলকে। প্রাক্তন বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের শিবিরের সঙ্গে প্রয়াত পুরপ্রধান অজয় দে শিবিরের বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে প্রায়শই। অরিন্দম বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন। আর ভোটের পরে প্রয়াত হয়েছেন অজয়। কিন্তু দুই শিবিরের দূরত্ব কমেনি। অরিন্দমের দলত্যাগের পরে অজয় দে জীবিত থাকাকালীনও তা সামনে এসেছে। গত বছরেই তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল হয়। সেখানে দল এবং যুব সংগঠনে শান্তিপুর শহরের কর্তৃত্ব অজয় দে শিবিরের থেকে নিয়ে তুলে দেওয়া হয় অরিন্দম ঘনিষ্ঠদের হাতেই। অরিন্দম দলত্যাগ করলেও তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নেতারা অবশ্য তৃণমূলেই রয়ে যান। দলের একাধিক কর্মসূচিতে দুই শিবিরকে এক সঙ্গে দেখাও যায়নি ইদানীং কালে।
শান্তিপুর বিধানসভায় আসন্ন উপ-নির্বাচনের আগে দলের দুই শিবিরের আলাদা আলাদা কর্মসূচিতে অনৈক্যই আরও একবার প্রকট হল বলেই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। অজয় ঘনিষ্ঠ শিবিরের নেতাদের অবশ্য দাবি, দলের শহর কমিটির কর্মসূচিতে তাঁরা ডাক পাননি। দলের তরফে কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছে, তাই তাঁরা তা পালন করছেন। যদিও শহরে দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দাবি, তাঁদের সকলকেই ডাকা হয়েছিল। তাঁরা আসেননি।
শান্তিপুরের প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান তথা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সালাম কারিগর বলেন, “ওঁদের কর্মসূচির কথা আমাদের জানাননি। আমাদের সঙ্গে ওঁরা যোগাযোগও করেন না। দলের তরফে যখন একটি কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে আমরা তা পালন করলাম। ওঁরা আমন্ত্রণ না করায় আলাদা ভাবেই করতে হল।”
আর শান্তিপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র বলেন, “প্রশাসকমণ্ডলীর প্রতি সদস্য এবং প্রাক্তন কাউন্সিলারদের সকলকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। কেন এলেন না আর কেন আলাদা কর্মসূচি করলেন জানি না। এ রকম না হলেই ভাল হত।”