Medicine Fair Price shop

ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানেও ‘বাড়তি’দাম নেওয়ার অভিযোগ

২০১২-১৩ সালে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ন্যায্য মূল্যের ওযুধের দোকান চালু করে রাজ্য সরকার। সেই মত শক্তিনগর জেলা হালপাতালেও ওই দোকান চালু হয়।

Advertisement
সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:১৫
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সরকারি ভাবে ধার্য করা ছাড়ের তোয়াক্কা না করে বেশি দামে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ উঠল শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের বিরুদ্ধে। ওই দোকান থেকে ওষুধ কিনলে পাকা রসিদও দেওয়া হচ্ছে। মিলছে না তালিকার সব ওষুধ। ব্যবহার না হওয়া ওষুধ ফিরিয়েও নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। দিনের পর দিন এমন অভিযোগ সামনে আসার পরেও কোনও পদক্ষেপ না করায় প্রশ্নের মুখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

২০১২-১৩ সালে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ন্যায্য মূল্যের ওযুধের দোকান চালু করে রাজ্য সরকার। সেই মত শক্তিনগর জেলা হালপাতালেও ওই দোকান চালু হয়। প্রথম থেকেই ৬০.৫ শতাংশ ছাড়় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করে আসছিলেন দরপত্রের মাধ্যমে দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা। মাস কয়েক আগে নতুন করে জেলার সমস্ত ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের জন্য দরপত্র নেওয়া হয়। সব চাইতে বেশি অর্থাৎ ৮৫ শতাংশ ছাড়ের দরপত্র জমা দিয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের দোকান পরিচালনার দায়িত্ব নেয় নতুন একটি ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু প্রথম থেকেই তারা ৮৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭০ শতাংশ করে ছাড় দিচ্ছে বলে অভিযোগ।

এত টাকা ছাড় আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রথম থেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকেই। তাঁদের দাবি ছিল, এক বিরাট পরিমাণ ছাড় দিয়ে কোনও ভাবেই ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। তাঁদের দাবি, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানটির পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার জন্য দরপত্রে ৮৫ শতাংশ ছাড়ের কথা বললেও বাস্তবে সেটা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেই তারা ১৫ শতাংশ কম ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর পাকা চালান বা কম্পিউটার ‘প্রিন্টেড ক্যাশমেমো’ দিলে সেটা ধরা পড়ে যাবে বলেই তারা সেটা দিচ্ছে না। শুধু তাই নয়, ১৯৮ রকমের ওষুধ রাখার কথা থাকলেও তারা সেটা রাখতে পারছেন না। কারণ অনেক ওষুধে ব্যবসায়ীদেরই এত কম ছাড় মেলে যে খরিদ্দারকে ৮৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। একই কারণে ওষুধ ফেরতও নেওয়া হচ্ছে না।

আর এই কারণে হয়রান হতে হচ্ছে রোগীর পরিজনদের। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ওষুধ। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের সামনে সদ্য কেনা ওষুধের প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক রোগীর বাড়ির লোককে বিষয়টা নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি যেন আকাশ থেকে পড়েন। চাপড়ার হাঁটরার বাসিন্দা হালিম মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি এত হিসাব বুঝি না, ওরা বেশি দাম নিচ্ছে নাকি!” অভিযোগ অবশ্য পুরোপুরি অস্বীকার করেননি ঠিকাদার সংস্থাটির মালিক শম্ভু সাহা। তিনি বলেন, ‘‘কম্পিউটার-সহ সমস্ত পরিকাঠামো এখনও তৈরি করে উঠতে পারছি না বলেই প্রিন্টেড ক্যাশমেমো দিতে পারছি না। আগামী মাস থেকে দিতে পারব।”

দাম বেশি নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি অবশ্য সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি প্রথমে বলেন, আগামী মাস থেকে ৮৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে চেপে ধরার পরে তিনি দাবি করেন, “৮৫ শতাংশ ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না বলে আমার জানা নেই। ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তার পর বলতে পারব।”

আর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, “আমরা এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে এক জনের কাছ থেকে মৌখিক ভাবে বিষয়টা জানার পরে একটি মনিটরিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় নেওয়া হবে।”

Advertisement
আরও পড়ুন