Ferry

ferry: অনুমতি নিয়েই ধন্দ, বন্ধ হয়ে গেল ঘাট

গৌরনগর ঘাটে পাঁচ জন মাঝি রয়েছেন। পারাপারের জন্য নৌকা রয়েছে তিনটি। কিন্তু লাইফ জ্যাকেট ব্যবহারের কোনও বালাই নেই।

Advertisement
সৌমিত্র সিকদার
চাকদহ শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:১৯
বন্ধ এই ঘাট। নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ এই ঘাট। নিজস্ব চিত্র।

বর্ষার শেষ লগ্নে ভরা গাং। পিছল ঘাট, নৌকায়-ভেসেলে গাদাগাদি। একটু অসতর্কতায় ডুবতে পারে তরী। লাইফ জ্যাকেট রয়েছে গায়ে? কতটা বাঁধা আছে নিরাপত্তার আটঘাট? খোঁজ নিচ্ছে আনন্দবাজার।

নদীর পাড়ে বাঁশের খুঁটি, কালো পলিথিন দিয়ে যাত্রীদের বসার জায়গা। ইতিমধ্যে ত্রিপলের কয়েকটি জায়গায় ফুটো হয়ে গিয়েছে। বাঁশ দিয়ে বেঞ্চ তৈরি করা রয়েছে। যাত্রীরা এসে বসছেন। সামনেই বাঁশের মাচা দিয়ে তৈরি হয়েছে জেটি। ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা ওঠানামা করছেন। ভুটভুটি যাওয়া আসার টাইম টেবিল টাঙানো রয়েছে। এক টুকরো টিনে লিখে রাখা হয়েছে মাস্ক পরার কথা, যে সতর্কবার্তা অনেকেরই চোখে পড়বে না।

Advertisement

এক দিকে নদিয়া জেলার গৌরনগর ঘাট, অন্য দিকে হুগলি জেলার মিলনগড়। মাঝে ভাগীরথী। পারাপারের কাজ করে ট্রলার, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। প্রতিটি ট্রলারে কুড়ি জন যাত্রী যেতে পারেন। তবে মাঝিরা জানাচ্ছেন, করোনাকালে যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। মাস্ক নিয়ে নামে মাত্র প্রচার যেমন আছে, তার সঙ্গে সঙ্গত রেখেই যাত্রীদের অধিকাংশ মাস্ক পরেন না। দু’এক জন পরলেও থুতনিতে মাস্ক নামিয়ে রাখেন। যাত্রী ছাড়াও মোটরবাইক, টোটো, সাইকেল পারাপার হয়।

চাকদহ ব্লকের চান্দুরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরনগরে এই ঘাটের আইনি বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। কে সেখানে নৌকা চালানোর অনুমতি দিয়েছে? অনুমতি দেয়নি জেলা পরিষদ। পঞ্চায়েত প্রধান শেফালি দাস হালদার বলেন, “পঞ্চায়েত ওই ঘাটে নৌকা চালানোর কোনও অনুমতি দেয়নি। খোঁজখবর নিয়ে দেখব।” অথচ, হুগলির বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পায়েল পাল বলেন, ‘‘ওই ঘাট চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। মাঝিদের নিয়ে আলোচনা করে স্যানিটাইজার, মাস্ক, লাইফ জ্যাকেট রাখার নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে। ’’

আবার চাকদহের বিডিও অতনু ঘোষ বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এক সময়ে অনুমতি ছিল ঠিকই, কিন্তু গৌরনগর ভাঙনপ্রবণ এলাকা হওয়ায় সেই অনুমতি বাতিল করা হয়েছিল। তার পরে কী করে সেখানে পারাপার চলছিল জানি না। শনিবার থেকে ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

গৌরনগর ঘাটে পাঁচ জন মাঝি রয়েছেন। পারাপারের জন্য নৌকা রয়েছে তিনটি। কিন্তু লাইফ জ্যাকেট ব্যবহারের কোনও বালাই নেই। মাঝি উত্তম বর্মন বলেন, “কিছু লাইফ জ্যাকেট রয়েছে। সেগুলো কেউ পরতে চায় না। সে জন্য নৌকার ছাদে তুলে রেখেছি। কেউ চাইলে সেখান থেকে নামিয়ে দেব।” আর এক মাঝি শঙ্কর বর্মন বলেন, “যাত্রীদের সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়। বিষয়টি লিখেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, অনেকেই তাতে গুরুত্ব দেন না। বলে-বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।’’

ঘাট মালিকদের পক্ষে থেকে জানানো হয়েছিল, প্রায় দু’বছর ধরে ঘাট চালানো হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুমতি রয়েছে। কিন্তু তার আগেই অনুমতি নিয়ে ধোঁয়াশা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ওই ঘাটে খেয়া চলাচল শনিবার থেকে বন্ধ হল।

আরও পড়ুন
Advertisement