জজানের দত্ত বাড়ির প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।
উমা আহ্বানে আজও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে মুর্শিদাবাদের জজানের দত্ত বাড়ির পুজো। দুর্গাপুজোর প্রতি দিন নৈবেদ্য হিসাবে দেবীকে দেওয়া হয় সাতটি গ্লাসে শরবৎ। বয়সে পুজোর ভার বাড়লেও সেই রীতিতে ছেদ পড়েনি আজও।
এ বার ১৮৩ বছরে পা দিল মুর্শিদাবাদের জজানের দত্ত বাড়ির পুজো। ১৮৩৮ সালে ওই পুজো শুরু করেন জজানের জমিদার প্রাণকৃষ্ণ দত্ত। কথিত আছে, দুর্গা মধ্যরাতে তাঁকে দেখা দিয়েছিলেন এবং পুজো করার আদেশ দেন। তার পর থেকে চলে আসছে সেই পুজো। একচালার প্রতিমা, ডাকের সাজ— আর পাঁচটা বনেদি বাড়ির পুজোর মতো দত্ত বাড়ির পুজোর বৈশিষ্ট্য এ সবই। তবে পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। বোধনের দিন থেকে নবমী তিথি পর্যন্ত বসে নহবত। এক সময় মহাষ্টমীর পুজোর সূচনা হত গুলির শব্দে। তবে এখন সেই রীতি আর নেই। প্রাচীন নিয়ম অনুসারে, আজও জজান গ্রামের প্রতিটি মণ্ডপ দর্শনের জন্য প্রতি দিন ঢাকঢোল বাজিয়ে শোভাযাত্রা বার করা হয় দত্ত বাড়ির তরফে।
বিসর্জন কালেও এক সময় ছিল নানা মজার আয়োজন। জজানের দুই বনেদি পরিবার দত্ত এবং চন্দ্রদের মধ্যে দশমীর দিন বাইচ প্রতিযোগিতা হত প্রতিমা নিয়ে। তার পর দুই জমিদার বাড়ির প্রতিমা লেঠেলদের কাঁধে চড়িয়ে হত শোভাযাত্রা। কিন্তু পরবর্তীকালে চন্দ্র বাড়ির পুজো বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় অবশ্য দত্ত বাড়ির প্রতিমা ৪০ জন বাহকের কাঁধে চড়িয়ে গ্রাম জুড়ে শোভাযাত্রা করে বিসর্জন হত। সেই সব প্রথায় কোথাও কোথাও ছেদ পড়েছে। তবে দত্ত বাড়ির পুজো স্বকীয়তায় আজও অমলিন।