RG Kar Hospital Incident

রাতেও প্রেমিকের সঙ্গে কথা চিকিৎসকের

রবিবার তখন দুপুর, আকাশের মুখ ভার। কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা।

Advertisement
সুদেব দাস
কল্যাণী  শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৪৭
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

তরুণী তখন সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। মেডিক্যালের জয়েন্ট এন্ট্রান্স দেওয়ার জন্য দমদমের একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন। সেখানেই পরিচয় হয় এক তরুণের সঙ্গে। ভাল বন্ধুত্ব, প্রেম থেকে এক যুগের সম্পর্ক। এই বছরের শেষেই তরুণের সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়ার কথা ছিল মেয়েটির। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে সেই সঙ্গী চিকিৎসক তরুণেরও।

Advertisement

রবিবার তখন দুপুর, আকাশের মুখ ভার। কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা। পাশেই রয়েছে পুলিশের একটি আউটপোস্ট। সেখানে দাঁড়িয়েই ফোন করা গেল ধর্ষিত-খুন হওয়া চিকিৎসক ছাত্রীর কাছের মানুষটিকে। কলার টিউন লগ্নজিতার গান— ‘আমাদের গল্পগুলো অল্প সময় ঘর পাতাল, তারপর পথ হারাল তোমায় আমায় নিয়ে।’

ফোনের ও প্রান্তে পুরুষ কণ্ঠ। ফোন ধরলেন ওই তরুণের এক জুনিয়র ডাক্তারি পড়ুয়া। জানালেন, স্যর এখন কথা বলার পরিস্থিতিতে নেই। ওই জুনিয়রের সঙ্গে কথা বলেই জানা গেল, নিহত মহিলা চিকিৎসক এবং তাঁর সঙ্গীকে দীর্ঘদিন কাছ থেকে দেখেছেন ওই ডাক্তারি ছাত্র। তাঁদের দু’জনের সম্পর্কের কথাওজানেন সকলে।

মৃত তরুণীর সঙ্গীর জুনিয়র তখনও বলে চলেছেন—‘‘আমি স্যর এবং ম্যাডামের ছাত্র। খুব কাছ থেকে ওঁদের দেখেছি। আমায় ওই পরিবারের একজন বলতে পারেন। ম্যাডাম (নিহত মহিলা চিকিৎসক) চলে গিয়েছেন। স্যরকে সামলাতে পারছি না।’’

এমবিবিএস পড়ুয়া জুনিয়র ডাক্তারি ছাত্রটি আরও জানান, কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যালে প্যারামেডিক্যালের পড়ুয়া থাকার সময়েই তিনি ওই তরুণী ও তরুণকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। ডাক্তারি পড়তে আসার আগে থেকেই একে অপরের পরিচিত। দুই জনেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন। এই বছর ডিসেম্বরে বিয়ের কথাও ছিল। দুই বাড়িতে সব কিছু জানত।’’

কিন্তু তরুণের স্বপ্ন পরিণতি পেল না। মহিলা চিকিৎসকের নৃশংস মৃত্যু সব স্বপ্ন মুছে দিয়েছে চোখ থেকে। এখন সেখানে শুধুই অশ্রুবারি। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাত এগারোটা নাগাদ নিহত চিকিৎসক ছাত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর প্রেমিক ওই তরুণ চিকিৎসকের। কিন্তু প্রেমিকা হাসপাতালে সেই সময়ে কর্তব্যরত থাকায় বেশি ক্ষণ কথা হয়নি। ফোন রেখে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তরুণী। তখনও যে কেউ ভাবেননি— ওই ফোনই হবে দু’জনের শেষ কথোপকথন।

আরও পড়ুন
Advertisement