সৌমেন মাহাতো। নিজস্ব চিত্র
গত দুই নির্বাচনে কংগ্রেসকে শান্তিপুর আসনটি ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাদের। উপনির্বাচনে ভূমিপুত্র তথা স্থানীয় নেতা সৌমেন মাহাতোকে প্রার্থী করে ময়দানে নামল সিপিএম।
রবিবারই তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করেছে, বিজেপি এখনও করেনি। এরই মধ্যে সোমবার বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে রাজ্যের চার কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্তমানে সিপিএমের শান্তিপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সৌমেন মাহাতো ২০০৫ থেকে টানা তিন বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ছিলেন শান্তিপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতাও। ১৯৯৯ সালের পার্টি সদস্য সৌমেন ১৯৯৫ সালে কলেজে পড়ার সময়েই এসএফআই করেছেন। পরে ডিওয়াইএফ-এর জেলা কমিটির সদস্য, শান্তিপুর শহর লোকাল কমিটির সম্পাদকও ছিলেন। পরে সিপিএমের শান্তিপুর শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক হন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে থাকায় শান্তিপুরে বামেদের পরিচিত মুখ সৌমেন। তবে টানা কয়েকটি ভোটে অন্য জায়গার মত শান্তিপুরেও ক্রমশ পিছিয়েছে বামেরা। সেখানে এ বার লড়াই যথেষ্টই কঠিন। পাঁচ বছর আগে বাম-কংগ্রেস জোটের তরফে কংগ্রেস প্রার্থী এই আসনে জেতেন, কিন্তু গত প্রায় তিন দশক ধরে এই আসনে জয়ের মুখ দেখেনি বামেরা। এই আসনটি দীর্ঘদিন আরসিপিআই-কে ছেড়েছে সিপিএম। কিন্তু বর্তমানে তাদের সংগঠন বলতে প্রায় আর কিছুই নেই। আরসিপিআই-এর জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “বামফ্রন্টের মধ্যে আলোচনা করেই প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
বামেদের তরফে শান্তিপুর থেকে জিতে আরসিপিআই-এর বিমলানন্দ মুখোপাধ্যায় এক সময়ে মন্ত্রী ছিলেন। ভোটের লড়াইয়ে অবশ্য নয়ের দশক থেকেই ক্রমশ কংগ্রেসের কাছে পিছিয়ে পড়তে থাকে আরসিপিআই। ১৯৯১ সাল থেকেই আর জেতা হয়নি তাদের। ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে তাদের শক্তিও। ২০০১ সালে শান্তিপুরে আরসিপিআই প্রার্থী থাকলেও নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর অভিযোগ ওঠে ‘বড় শরিক’ সিপিএমের বিরুদ্ধেই। ২০০৬ সালে অবশ্য এখানে প্রার্থী দেয় সিপিএম এবং হারে। ২০১১ সালে ফের প্রার্থী দেয় আরসিপিআই। ২০১৪ সালের উপনির্বাচনে প্রার্থী দেয় সিপিএম। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বামেদের তরফে প্রথমে আরসিপিআই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও পরে জোটের স্বার্থে কংগ্রেসকে কেন্দ্র ছেড়ে দেওয়া হয়। কংগ্রেস প্রার্থী জিতে পরে তৃণমূলে চলে যান। এ বার বিধানসভা ভোটেও মোর্চার তরফে প্রার্থী ছিল কংগ্রেসেরই। তবে হারতে হয়।
সৌমেন বলছেন, “মানুষ তৃণমূল এবং বিজেপি দুজনকেই দেখেছে। এ বার বামেদের সঙ্গেই তাঁরা থাকবেন।”