প্রতীকী ছবি। ফাইল চিত্র।
খাস বহরমপুর শহর থেকে তাজা বোমা উদ্ধার হল। শনিবার সকালে বহরমপুরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্ধিপাড়া পিরতলা একালা থেকে দুটি জার ভর্তি বোমা উদ্ধার করেছে। পুলিশের দাবি, ওই জারে ১০ টি বোমা ছিল। সেগুলি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আর এই বোমা উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিকদলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, সামনেই পুরভোট। আর সেই ভোটকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। তৃণমূল আবার সরাসরি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই বোমা রাখার অভিযোগ তুলেছে।
বহরমপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, সেখান থেকে ১০টি বোমা উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি কে বা কারা রেখেছে তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
বহরমপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল রাজ্য জুড়ে ভাল ফল করে ক্ষমতায় এসেছে। আগামী দিনে পুরসভাও দখল করবে। কিন্তু পুর নির্বাচনে যাতে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতে না পারে সে জন্য কংগ্রেস পুরনো কায়দায় খুনোখুনির রাজনীতি করতে চাইছে। এজন্য বোমাগুলি এসব মজুত করছে। তবে তৃণমূল কোনও ভাবেই অশান্তি পাকাতে দেবে না।’’
তবে জেলা কংগ্রেসের এসসি, এসটি সেলের সভাপতি তথা ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর হিরু হালদার বলেন, ‘‘পুর নির্বাচনে ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই তৃণমূল ও বিজেপি শহরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। এভাবে বোমা মজুত করে তারা শহরকে অশান্ত করে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। আমরা চাই রাজনীতির রং না দেখে পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক।’’
বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র কাঞ্চন বলেন, ‘‘বিজেপি খুনোখুনি, অশান্তির রাজনীতি করে না। আমরা না জেনে কোনও দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব না। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করুক। তাতেই পরিষ্কার হয়ে যাবে এই বোমার সঙ্গে কাদের সম্পর্ক রয়েছে।’’
গত বিধানসভা নির্বাচনের দিনে বহরমপুর শহরের কান্তনগর এলাকায় বোমাবাজি হয়। সে সময় তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ তুলেছিল। এমনকি তৃণমূল প্রার্থী তথা বহরমপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি নাড়ুগোপাল ভোটের দিন বোমাবাজির অভিযোগ তুলে কান্তনগরে পথ অবরোধ করেছিলেন। সেদিন অবশ্য বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। ভোটের পরে মাসখানেক আগেই ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলকল মোড়ের কাছে রাতের অন্ধকারে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। ফের শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর হিরু হালদারের বাড়ির কাছে বাগান থেকে দুটি জার ভর্তি বোমা উদ্ধার করতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিন সকালে বাগান এক ব্যক্তি জারে বোমা দেখে পুলিশে খবর দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা অমল সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যেখানে বোমা পাওয়া গিয়েছে তার পাশেই ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করে। ফলে বড় অঘটনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গেল। তবে আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক।’’