বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার প্রথম সারির দুই নেতা-নেত্রী বৃহস্পতিবার তৃণমূলে যোগ দেন। তা নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে প্রধান বিরোধী দল।
বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার মহিলা মোর্চার সভানেত্রী উত্তরা বাড়ুরি ও কিষান মোর্চার সভাপতি বুদ্ধদেব মালো এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের সঙ্গে বিজেপির কয়েকশো কর্মীও তাদের দলে যোগ দিয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। যোগদানকারীদের মধ্যে তফসিলি ও মতুয়া সম্প্রদায়ের অনেকে রয়েছেন বলেও তৃণমূল দাবি করেছে।
কল্যাণীর ঋত্বিক সদনে তৃণমূলের কল্যাণী শহর সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায়, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রত্না ঘোষ-সহ অন্য বেশ কয়েক জনের উপস্থিতিতে এ দিন এই যোগদান কর্মসূচি হয়। বিধানসভা ভোটে জেলার দক্ষিণে ভাল ফল করলেও এই দলবদলে বিজেপি বেশ ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে।
কল্যাণী বিধানসভায় বিজেপির এই ভাঙনের পিছনে বিধানসভায় প্রার্থী নির্বাচন সংক্রান্ত অসন্তোষ বড়় ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এখানকার বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের সঙ্গে বিজেপির অনেক কর্মী-সমর্থকের এখনও যোগাযোগ নেই বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। যদিও এ দিন এই বিষয়ে ফোন করা হলে ফোন ধরেননি অম্বিকা রায়।
এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন উত্তরা বাড়ুরি। বলেছেন, “বিজেপির মধ্যে দলীয় কোনও শৃঙ্খলা নেই। বিজেপি মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না। ওখানে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না।” অন্যদিকে, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মানস্পতি দেবের কথায়, “উত্তরা বাড়ুই ও বুদ্ধদেব মালোকে দলের দায়িত্ব থেকে বুধবার রাতেই অব্যহতি দেওয়া হয়েছে দলবিরোধী কাজের জন্য। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। আরও যাঁরা গিয়েছেন তাঁদের কেউ-কেউ তৃণমূলের চাপে যেতে পারেন। তাতে বিজেপি-র ক্ষতি হবে না।”
বুদ্ধদেব মালো-র বক্তব্য, “বিজেপির যে নীতি-আদর্শ ছিল, তা আর নেই। দলের অনেক ভাল কর্মীকে তুলে আনা হচ্ছে না।” যদিও বিজেপির কিষান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, “বুদ্ধদেব মালো অনেক আগে থেকেই দলে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। আগেই তাঁকে পদ থেকে সরানো হয়েছিল। উনি পথভ্রষ্ট হয়ে তৃণমূলে যাচ্ছেন। তাতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।”
তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী রত্না ঘোষ এ দিন বলেন, “অনেকে বিজেপির মাধ্যমে বিভ্রান্ত হয়ে সেই দলে গিয়েছিলেন। এখন তাঁরা বুঝতে পেরে আবার তৃণমূলে ফিরছেন। একসঙ্গে কাজ করতে চাইছেন।”