উদ্বেগের-প্রহর: বহরমপুরে বসে কাবুলের খবরে সন্ত্রস্ত। নিজস্ব চিত্র।
বাপ ঠাকুর্দার ভিটে ছেড়ে সেই কবে নিজেদের মুলুক আফগানিস্থান ছেড়ে চলে এসেছেন তা আজ আর মনে করতে পারেন না বলে দাবি বহরমপুরের কাবুলিওলাদের। খাগড়া বড় মসজিদ তলায় তাঁদের দীর্ঘদিনের অস্থায়ী বসবাস। এখানকার জল হাওয়াতেই তাঁদের জীবন জীবিকা। তবু গত চারদিনে হঠাৎ করেই সেই চেনা মুখের ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছে বলে দাবি ওই এলাকার অন্য বাসিন্দাদের।
টিভির পর্দায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় ফুটে উঠেছে তালিবানদের কাবুল দখলের ছবি। সেদিনই বহরমপুরে বসে ওঁরা প্রমাদ গুনেছিলেন নিজেদের ভবিতব্যের। তারপর থেকে শুধুই সংবাদমাধ্যমে নজর রেখে যাওয়া। কাবুলের আকাশের উড়ান থেকে কালো কালো মানুষগুলোকে টুপটাপ পড়ে যেতে দেখে শিউরে উঠেছিলেন মালিক খান, আনোয়ার খান, হামিদ খান, আফগান খানরা।
শুধু বহরমপুরেই নয় ওরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন গোরাবাজার, লালবাগেও। তাঁদের আত্মীয়দের অনেকে পাকাপাকি ভাবে বাস করেন কলকাতা, আসানসোল, দিল্লিতেও। এদের কেউ সুদের কারবার করেন কেউবা কাপড়ের ব্যবসা করেন।
এমন মানুষগুলোর মুখোমুখি হতেই টের পাওয়া গেল সেটা। সন্ত্রস্ত মুখগুলো আরও ফ্যাকাসে হয়ে গেল মুহুর্তে, “আমাদের সঙ্গে কাবুলের কোনও সম্পর্কই নেই” বলে একবাক্যে বিদায় জানিয়ে ছিলেন ওরা। বললেন, “আপনারা যা শুনছেন আমরাও তাই শুনছি” বলে পরিস্থিতি কিছুটা সামলানোর চেষ্টা করলেন হামিদ খান। তবে নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে। আপত্তি জানালেন কাবুলিওয়ালা ডাকে। হামিদ বললেন, “মানবের উপর অত্যাচার হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। চাই না মানুষে মানুষে বিভাজন হোক।” বিমান থেকে মানুষকে পড়তে দেখে তার ভেতরটা মুষড়ে গিয়েছে জানিয়ে মধ্য বয়স্ক হামিদ বলেন, “ সেতো কারও ছেলে, কারও বাবা কারও স্বামী। মনে হল গোটা দেশটাকে যেন ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হল।” বলতে বলতেই তাঁর চোখ মুখ লাল হয়ে উঠতে লাগল।