TMC Leader Murder Case

তৃণমূল নেতাকে খুন করে ‘কিরণমালা’ দেখেন তিন খুনি! বহরমপুরকাণ্ডে ধৃত যুবনেতার কাছে মিলল তথ্য

গত ২৭ জানুয়ারি বহরমপুর থানার চালতিয়ায় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে খুন হন তৃণমূল নেতা সত্যেন চৌধুরী। তাঁকে গুলি করে বাইকে উঠে পালান তিন জন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৮
gun

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাজ্য জয় করে সদ্য ফিরে আসা রাজকুমারের হাত ধরে আলোক উদ্ভাসিত মঞ্চে গানে গানে প্রেম নিবেদন করে চলেছেন রাজকুমারী, সেই গানে বাজনার তালে তাল ঠুকছেন যে তিন জন, তাঁরা ঘণ্টা দুই আগেই নিখুঁত নিশানায় গুলি করে খুন করে এসেছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদককে। বহরমপুরে তৃণমূল নেতা সত্যেন চৌধুরী খুনে ধৃত এক তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেল পুলিশ।

Advertisement

গত ৭ জানুয়ারি বহরমপুর থানার চালতিয়ায় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলে খুন হন তৃণমূল নেতা সত্যেন। পাশের একটি দোকান থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ দেখতে পায় একটি বাইকে তিন জন এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের মাথায় ছিল হেলমেট। গুলি চালানোর পর ধীরে সুস্থে আততায়ীরা সত্যেনের দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালান। ওই সূত্র ধরে খোঁজ শুরু হয় খুনিদের। ঘটনাস্থল থেকে পালাবার একাধিক রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে খুনিরা নওদা হয়ে নদিয়ার সীমান্তে গা ঢাকা দিয়েছে। সে দিন রাত থেকেই শুরু হয়েছিল তল্লাশি। সত্যেনের একটি ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। তার কল লিস্ট খতিয়ে দেখে নদিয়ার এক তৃণমূল নেতা সম্পর্কে তথ্য পান তদন্তকারীরা। তার পর নদিয়ার তেহট্ট-১ ব্লকের কানাইনগর অঞ্চলের যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি মুস্তাফা শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর নেতাদের দাবি, আদতে মুস্তাফা কলা ব্যবসায়ী হলেও তাঁর সঙ্গে দুষ্কৃতীদের ওঠাবসা ছিল। ছিল ‘সুপারি কিলার’দের সঙ্গে যোগাযোগও। আগেও এক তৃণমূল নেতাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল মুস্তাফার বিরুদ্ধে। এ হেন তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের পর টানা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের একটি সূত্রে খবর, গত ৭ জানুয়ারি রাত ৮টা নাগাদ বিনোদনগর গ্রামে বেশ কিছু ক্ষণ সময় কাটান অভিযুক্তেরা। সেখানে স্থানীয় একটি ক্লাবের মাঠে ‘কিরণমালা’ নামে একটি পঞ্চরস (পালাগান) উপভোগ করেন তাঁরা। তবে পুলিশের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পেয়েই সেখান থেকে পরে গা ঢাকা দেন তিন জন। তদন্তকারীরা ওই গ্রামে পৌঁছে সন্দেহভাজনদের ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রত্যেককেই শনাক্ত করেন গ্রামবাসীরা। মুস্তাফাও পুলিশের জেরায় স্বীকার করেন যে, তিন জন তাঁর কাছে ‘বেড়াতে’ এসেছিলেন। তবে খুনের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। যদিও খুনের চেষ্টার অভিযোগে ধৃত মুস্তাফা এখন অন্তর্বর্তী জামিনে রয়েছেন। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অসীম খান বলেন, ‘‘বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তদন্ত চলছে। এর বেশি এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement