Jamai Sasthi

মাছ-মিষ্টির সঙ্গে ‘মোর’, ষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি যেতে আধার কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে নিমন্ত্রিত জামাইদের

বিয়ের সময় থেকে জামাইষষ্ঠীর আগের দিন পর্যন্ত, শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে বার বার মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যা-ই ভুলে যান, সরকারি পরিচয়পত্রটা যেন সঙ্গে থাকে। নইলে শ্বশুরবাড়িতে ঢোকা হবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৪ ১৭:১৩
jamaisasthi

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আধার কার্ডের সঙ্গে ভোটার কার্ডে নামের বানানে ইংরেজি আদ্যক্ষরের মিল নেই। জেলা ডাকঘরে বার কয়েক লাইন দিয়েও করাতে পারেননি সংশোধন। শেষমেশ হাজার টাকা খরচ করে সাইবার ক্যাফে থেকে তৎকাল ব্যবস্থায় সংশোধন করেছেন আধার কার্ডের ভুল। হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন পেশায় শিক্ষক উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা দেবাশিস বিশ্বাস। সেই খবর পেয়ে স্বস্তিতে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে নদিয়ার চর মেঘনার বাসিন্দা দেবাশিসের শ্বশুর-শাশুড়ি। যাক বাবা! এ বার জামাইষষ্ঠীতে জামাই বাবাজি আসতে পারবে। বুধবার আর জামাইয়ের আসতে কোনও বাধা রইল না।

Advertisement

এই অভিজ্ঞতা অবশ্য নতুন নয়, প্রায় প্রতি বছর সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে যান চর মেঘনার জামাইয়েরা। বিয়ের সময় থেকে জামাইষষ্ঠীর আগের দিন পর্যন্ত, শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে বার বার মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যা-ই ভুলে যান, সরকারি পরিচয়পত্রটা যেন সঙ্গে থাকে। নইলে শ্বশুরবাড়ির কাছ থেকেই আবার বাড়ি ফিরে যেতে হবে। আটকে দেবে বিএসএফ!

নদিয়ার হোগলবেড়িয়া থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১২০ নম্বর কাঁটাতারের গেট পেরোলে চর মেঘনা। বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ১২০ নম্বর গেট থেকে দেড় কিলোমিটার উজিয়ে গেলে পড়বে গ্রাম। পশ্চিমে কাঁটাতারের বেড়া আর পূর্ব দিকে সীমান্ত বরাবর মাথাভাঙা নদী। পরিচয়পত্র জমা দিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) অনুমতি নিয়ে তবেই মেলে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার অনুমতি। তবে শুধু গেলেই হবে না, ফিরছেন কবে, সেটাও স্পষ্ট করে জানাতে হবে বিএসএফকে। তার পরেও রয়েছে নিয়মের নানা ‘গ্যাঁড়াকল’। সচিত্র পরিচয়পত্রের ছবির সঙ্গে মুখের একটু অমিল খুঁজে পেলেই আটকে দেওয়া হয় জামাইদের। সোজা খবর যায় শ্বশুরবাড়িতে। তার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে জামাইয়ের পরিচয় নিশ্চিত করলে তবেই গ্রামে ‘এন্ট্রি’ মেলে জামাইবাবাজির। তাই জামাইষষ্ঠীতে আম-জাম, কাঁঠাল, মিষ্টির হাঁড়ি— হাতে উপহার থাকুক বা না-ই থাকুক, চর মেঘনার জামাইদের পকেটে আধার কার্ড থাকতেই হবে।

এ নিয়ে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি একে আর্য বলেন, ‘‘কাঁটাতারের ও পারের বাসিন্দাদের কোনও রকম অসুবিধা হয় না। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় সামগ্রিক নিরাপত্তার কথা ভেবে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন মেনে অতিথি-অভ্যাগতদের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। আর কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’

Advertisement
আরও পড়ুন