Aplastic Anemia

নীলের উপোস করেও অসুস্থ শিশুকে রক্ত

বছরখানেক ধরে অ্যাপ্লস্টিক অ্যানিমিয়া বা অবর্ধক রক্তশূন্যতায় ভুগছে কল্যাণীর সগুনা পঞ্চায়েতের শান্তিনগর এলাকার আড়াই বছরের সানা দুর্লভ।

Advertisement
অমিত মণ্ডল
কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪০
রক্ত দিয়ে আড়াই বছরের শিশুর প্রাণ বাঁচালেন তরুণী।

রক্ত দিয়ে আড়াই বছরের শিশুর প্রাণ বাঁচালেন তরুণী। প্রতীকী চিত্র।

নীলপুজোর উপোস থাকলেও রক্ত দিতে পিছপা হলেন না এক তরুণী। হাসপাতালে এসে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন আড়াই বছরের শিশুর।

বছরখানেক ধরে অ্যাপ্লস্টিক অ্যানিমিয়া বা অবর্ধক রক্তশূন্যতায় ভুগছে কল্যাণীর সগুনা পঞ্চায়েতের শান্তিনগর এলাকার আড়াই বছরের সানা দুর্লভ। অস্থিমজ্জা থেকে ঠিক ভাবে রক্ত উৎপাদন হচ্ছে না। রক্তশূন্য হয়ে গেলে শরীরে ‘র‌্যাশ’ বেরিয়ে পড়ে, কখনও শরীরের কোনও কোনও অঙ্গ সবুজ হয়ে যায়। সপ্তাহে প্রায় দু’-তিন দিন পর পরই রক্ত দিতে হয় তাকে। গত বুধবার রক্তশূন্য হয়ে মলদ্বার দিয়ে শিশুটির রক্তপাত শুরু হয়। তড়িঘড়ি তাকে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

সে সময়ে হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে কোনও গ্রুপেরই রক্ত পাওয়া যাচ্ছিল না। রক্তদাতা জোগাড় করে দিলে তবেই রক্ত মিলছিল।

বুধবার ‘এ’-পজ়িটিভ রক্তদাতা পাওয়া গেলেও বৃহস্পতিবার রক্তদাতা পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে এক পরিচিতের কাছে বিষয়টি জানতে পারেন উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়া জোনপুরের বাসিন্দা মেঘাশ্রী চক্রবর্তী। ওই দিন সকাল থেকেই নীলপুজোর উপোস ছিলেন মেঘাশ্রী। তার পরেও শিশুর রক্তের তৎপরতার খবর শুনে দুপুরের দিকে হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে এসে রক্ত দিয়ে যান তিনি। তাঁর রক্ত দেওয়ার পরে সানাকে প্লেটলেট ও রক্ত দেওয়া হয়। মেঘাশ্রী বলছেন, “আমার নিজেরও একটা ছেলে রয়েছে। ওইটুকু মেয়ে এই ভাবে কষ্ট পাচ্ছে। মাতৃত্ববোধ থেকেই রক্ত দিতে গিয়েছিলাম। বাচ্চাটা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক, এইটুকুই চাই।”

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারও কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে (জেএনএমে) সানার চিকিৎসা চলেছে। এ দিনও প্লেটলেট ও রক্ত দিতে হয়েছে। সানার বাবা বিকি দুর্লভ দিনমজুরি করে সংসার চালান। অসুস্থ মেয়েকে দক্ষিণ ভারতের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার অর্থ জোগাড় করছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement