—ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে ধৃত ন’জনকে জেরায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। জেরায় উঠে আসা সেই সব তথ্য যাচাই করতেই শুক্রবার নদিয়ার রানাঘাটে মৃত পড়ুয়ার মামার বাড়িতে গেল কলকাতা পুলিশের একটি দল। চার সদস্যের ওই দলটি সেখানে মৃত পড়ুয়ার বাবা এবং মামার সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলে। মৃতের মামা বলেন, ‘‘তদন্তের প্রয়োজনে কলকাতা পুলিশের একটি দল এসেছিল। পুলিশ অফিসারেরা আমাদের কাছে কিছু তথ্য জানতে চায়। আমরা সব রকম ভাবে সহযোগিতা করছি।’’ যদিও তদন্তকারীরা কী জিজ্ঞাসা করেছেন, কোন তথ্য যাচাই করতে চাইছিলেন, তদন্তের স্বার্থে সেই ব্যাপারে পরিবারের কেউই মুখ খুলতে নারাজ।
৯ অগস্ট, গত বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ২ ব্লকের বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া। নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হয় পরের দিন, বৃহস্পতিবার ভোরে। সেই ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। খুনের মামলা দায়ের করে শুরু হয়েছে তদন্ত। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ন’জন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের জেরা করে সেই রাতে কী ঘটেছিল, তার রূপরেখা পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার রাতে অভিযুক্তদের সঙ্গে মৃতের পরিবারের লোকেদের কথাও হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ধৃতদের বয়ানের সঙ্গে পরিবারের বক্তব্য মিলিয়ে দেখতেই মৃত পড়ুয়ার বাড়িতে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার দুপুর নাগাদ মৃত পড়ুয়ার মামার বাড়িতে পৌঁছন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, হস্টেলে থাকার ব্যাপারে ধৃত সৌরভ চৌধুরী, মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্তদের সঙ্গেই কথা বলেছিল নবাগত ওই পড়ুয়ার পরিবার। কথাবার্তায় আর্থিক লেনদেনের বিষয়ও উঠে এসেছিল। সেই তথ্য আদৌ সঠিক কি না, জানতে চাইছিলেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের সঙ্গে পরিবারের আর কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে, সেই সব খুঁটিনাটিও তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ কলকাতা পুলিশের দলটি।
শুক্রবার মৃত পড়ুয়ার বাড়িতে যান সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দলও। সেই দলে ছিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর সুজন বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে কলেজ ক্যাম্পাসগুলিতে নির্বাচন নেই। প্রাক্তনী হয়েও শাসকের মদতপুষ্ট সমাজবিরোধীরা কলেজগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’ পাশাপাশিই, পড়ুয়ামৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ‘রাজনীতি’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘রাজনীতি করার অনেক বিষয় আছে। কিন্তু এমন একটি মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি বন্ধ হোক।’’
সুজনের যাওয়া নিয়ে মৃতের মামা বলেন, ‘‘সুজনবাবু পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ওঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’’