প্রতীকী ছবি।
ফের প্রচুর সিম কার্ড ও বেশ কিছু পেটিএম বারকোড উদ্ধার করল পুলিশ। ভুয়ো ফোন করে এটিএম কার্ডের পিন নম্বর হাতিয়ে জালিয়াতি ও অনলাইনে জুয়া চক্রের হদিশ পেয়ে শনিবার রাতে করিমপুর থানার পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। ওই রাতেই করিমপুরের সেনপাড়া গ্রামে একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ৭০০ সিম কার্ড, একটি কম্পিউটার, প্রচুর পেটিএম বারকোড। পুলিশের অনুমান, এই জালিয়াতির পিছনে আন্তঃরাজ্য চক্র বিশেষত ঝাড়খণ্ডের ‘জামতাড়া গ্যাং’-এর যোগ থাকতে পারে। যে কারণে করিমপুর থানার তদন্তকারী অফিসার ছাড়াও সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ বিস্তারিত তদন্ত
শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত মজিবর শেখের বাড়ি সেনপাড়া গ্রামের বাগানপাড়ায়। আর এক অভিযুক্ত মানবেন্দ্র সরকারের বাড়ি সেনপাড়া গ্রামেরই পাঁচগাছিতে। তল্লাশি চালানোর সময়ে ওই বাড়ি থেকে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানার জয়রামপুরের বাসিন্দা রমেন কর্মকারকেও গ্রেফতার করা হয়। তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘর তল্লাশি করে সিম কার্ড, কম্পিউটারও পেটিএম বারকোড বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার তেহট্ট আদালতে তোলা হলে বিচারক মজিবর ও মানবেন্দ্রকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। রমেনকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে অভিযুক্তদের জেরা পরে ফের ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে লুকিয়ে রাখা এক হাজার সিম কার্ড ও বেশ কিছু পরিমাণে পেটিএম বারকোড উদ্ধার করা হয়। কারা অভিযুক্তদের সিম কার্ড সরবরাহ করত, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে।
পুলিশের দাবি, তাদের হেফাজতে থাকা দুই অভিযুক্ত যে প্রতারণা ও জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত ছিল তা কার্যত স্পষ্ট। অনলাইনে জুয়া খেলা ও সাধারণ মানুষকে ফোন করে তাদের পিন জেনে টাকা হাতানোর কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। একটি চিনা অ্যাপের মাধ্যমে তারা জুয়া চালাত। এ ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে লোকের কাছে থেকে আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি সংগ্রহ করে তাদের নামে সিম চালু করে অনলাইনে জুয়া খেলত তারা। গত ছয় মাসে বেশ কিছু মানুষের এটিএম কার্ডের পিন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়ার কথাও তারা স্বীকার করেছে। বেশ কয়েক লক্ষ টাকা তারা জালিয়াতি করেছে। সেই টাকা কিছু লোকের থেকে ‘ভাড়া করা’ অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হত। তদন্তকারীদের অনুমান, জালিয়াতির অঙ্কটা আরও অনেকটাই বেশি হতে পারে। কোন কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হত, সেই তথ্য জানতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু
করেছে পুলিশ।