আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ মিছিল করেন বাগবাজার বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয় এর প্রাক্তনীরা কিন্তু সেই মিছিলে যোগ দেন ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা-বাগবাজারের ছবি: সুমন বল্লভ।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ শহরের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে জেলাস্তরেও। নাগরিক সমাজের সঙ্গে পড়ুয়ারাও তাতে অংশগ্রহণ করছে। ঘটনাচক্রে, এমন সময়েই রাস্তায় নেমে আন্দোলনে পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিল নবান্নের সর্বোচ্চ মহল।
জেলা প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এক বার্তায় জেলাশাসকদের উদ্দেশে মুখ্যসচিব বলেছেন, রাস্তা অবরোধ-সহ একাধিক কর্মসূচিতে স্কুল পড়ুয়াদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা বরদাস্ত করা হবে না। কোথায় এমন ঘটছে, তা খুঁজে বার করে এমন প্রবণতা ঠেকাতে হবে। কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। সেই বার্তায় অবশ্য আর জি কর-কাণ্ডকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের কথার কোনও উল্লেখ নেই।
প্রশাসনের নির্দেশ, স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্মসূচি ছাড়া অন্য কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবে না কোনও পড়ুয়া। এমনকি, স্কুলের বাইরেও এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। কোথাও এমন কিছু ঘটছে কি না, তার খোঁজ রাখতে হবে জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু স্কুলের পরিধির বাইরে সহ-নাগরিকের উপর কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদে সরকার কী করে আপত্তি করতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।
তাঁরা কেউ কেউ এই প্রশ্নও তুলেছেন যে, শাসক দলের অনেক সভা-মিছিলে তো পড়ুয়াদের বহু সময়ে জোর করেই শামিল করা হয়, সেই সব ক্ষেত্রে এই নির্দেশ মানা হবে তো?
আধিকারিকদের একাংশের দাবি, পথ অবরোধ কর্মসূচিতে আইনি মান্যতা থাকে না। কোনও ঘটনা নিয়ে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে রাস্তা অবরোধের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু পড়ুয়াদের তেমন কাজে যুক্ত করা উচিত নয়, যেটার আইনি বৈধতা নেই।
সম্প্রতি শহরে তো বটেই, জেলার বহু স্কুলে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। তাতে প্রধানত যুক্ত হচ্ছেন স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, তেমন কর্মসূচি বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের তরফেও নিয়মিত ‘মৌখিক বার্তা’ থাকছে। সেই কারণে স্কুলের সময়ের পরে, স্কুলের ব্যানার ছাড়া আজ জি কর-কাণ্ডের নিন্দা এবং শাস্তির দাবি তোলা হচ্ছে। এ দিকে শুক্রবার শিক্ষা দফতর জানায়, কোনও শিক্ষক পড়ুয়ার উপরে মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।