নন্দীগ্রামে তৃণমূলের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
ফের রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াল নন্দীগ্রামে। শনিবার বিকেলে নন্দীগ্রামে বিজেপির তরফে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীতে উপস্থিত থাকবেন সেখানকার বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার আগেই নন্দীগ্রামের মহেশপুর এলাকায় বিজেপির বিরুদ্ধে দলের পতাকা ছেঁড়া এবং কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করল তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, গভীর রাতে তাদের দলীয় পতাকা, ফ্লেক্স ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শনিবার সকালে মহেশপুর বাজারে যাওয়ার প্রধান রাস্তায় কয়েকজন কর্মী নিয়ে পথ অবরোধ করেন নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস। তিনি বলেন, “বিজেপি বিনা প্ররোচনায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করছে। দলের পতাকা ছিঁড়ে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই আমাদের এই পথ অবরোধ।”
শনিবার বিকেলে মহেশপুর বাজার সংলগ্ন মাঠেই বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছে বিজেপি। সেখানে বক্তব্য রাখতে পারেন শুভেন্দু। তার জন্য গত কয়েক দিন ধরেই গোটা এলাকাকে বিজেপির পতাকা এবং ফেস্টুন দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। তৃণমূলের তরফে তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রণয় পাল বলেন, “তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি ক্রমশ সরে যাচ্ছে। নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে বিজেপির বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে তারা।”
প্রসঙ্গত, ২০০৭ নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের সময় খবরে এসেছিল এই মহেশপুর বাজার। ১৪ মার্চের গুলি চালনার ঘটনায় সব চেয়ে বেশি অশান্তির খবর এসেছিল এই মহেশপুর বাজার এলাকা থেকেই। এক সময় এই এলাকায় তৃণমূলের একচেটিয়া রাজনৈতিক প্রাধান্য থাকলেও, গত বিধানসভা নির্বাচনে এই এলাকা থেকে প্রায় ৩০০০ ভোটের লিড পেয়েছিল বিজেপি। ভোটপর্ব মেটার পরেও বহু বার এই এলাকায় তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতরের সাক্ষী নন্দীগ্রাম। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে জমি আন্দোলনের অন্যতম ‘আঁতুড়ঘর’ নন্দীগ্রাম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই প্রাক্তন দলীয় সতীর্থ, অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হন তিনি। যদিও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনর্গণনার দাবি জানায় তৃণমূল। পুনর্গণনার বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন।