Akhil Giri Resignation

সেচমন্ত্রী কি উত্তম! জোর চর্চা তৃণমূলে

নবান্ন সূত্রের খবর, সেচ দফতরের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার ফলে সেচ দফতরের মন্ত্রীপদ ফাঁকা। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কারা দফতর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৭
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মন্ত্রীত্ব গিয়েছে অখিল গিরির। কারামন্ত্রীর পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই জেলা থেকে সম্ভাব্য পরবর্তী মন্ত্রী হিসেবে সবচেয়ে বেশি চর্চা শুরু হয়েছে অখিলের ঘোর বিরোধী হিসাবে পরিচিত উত্তম বারিকের নাম নিয়ে।

Advertisement

পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতিও বটে। দলীয় সূত্রের খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের নেতাদের তালিকায়ও নাম রয়েছে উত্তমের। তাঁকে সেচ মন্ত্রী করা হতে পারে বলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। আবার অন্য সূত্রের খবর, উত্তমকে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দেওয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে উত্তম নিজে বলছেন, "আপনারা যেমন বলছেন, আমিও তেমনি শুনছি।"

তবে যে মন্ত্রকই দেওয়া হোক না কেন, উত্তম মন্ত্রী হলে বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা থেকে জোড়া মন্ত্রীই থাকবে মন্ত্রিসভায়। আপাতত নন্দীগ্রাম থেকে বিপ্লব রায়চৌধুরী মৎস্য মন্ত্রী রয়েছেন। অভিষেক-ঘনিষ্ঠ উত্তম মন্ত্রী হলে জেলা তৃণমূলের অন্দরেও নতুন সমীকরণ তৈরি হবে বলে অনেকেরই মত। সে ক্ষেত্রে অখিল-পন্থীদের অবস্থান কী হয়, সে দিকেও দলের নজর থাকবে।

তবে উত্তমকে মন্ত্রী করা হলে জেলা পরিষদের নতুন সভাধিপতি বাছতে হতে পারে। তাতে জেলায় শাসক দলে ফের গোষ্ঠী কোন্দলের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এর প্রভাব আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও পড়তে পারে। কিন্তু মূলত শুভেন্দু অধিকারীকে চাপে রাখতে বিপ্লবের পাশাপাশি জেলা থেকে আরও এক জনকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিতে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

মন্ত্রিসভায় রদবদলের ফাইলে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজভবনও। নবান্ন সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই রাজভবনের সবুজ সঙ্কেত এসে পৌঁছেছে রাজ্যের মূল প্রশাসনিক ভবনে। কারা নতুন তালিকায় থাকছেন তার চূড়ান্ত সেই তথ্য প্রকাশ করা না হলেও শীঘ্রই আদেশনামা সরকার প্রকাশ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নবান্ন সূত্রের খবর, সেচ দফতরের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার ফলে সেচ দফতরের মন্ত্রীপদ ফাঁকা। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কারা দফতর। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটতে চলেছে বলে রাজনৈতিক মহলের খবর। উত্তম বারিকের পাশাপাশি এগরা থেকে নির্বাচিত বিধায়ক তরুণ মাইতির নামও চর্চায় রয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন,"শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে আসার পর পূর্ব মেদিনীপুরে কোথাও উন্নতি হয়নি। কাজে নতুন কে কোথায় মন্ত্রী হচ্ছেন, তা নিয়ে জেলাবাসীর মাথাব্যথা নেই।"

প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকে হাতিয়ার করে প্রথমবার ২০০৮ সালে পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদ দখল করেছিল তৃণমূল। ২০১১ সালে বামেদের হারিয়ে ক্ষমতায় আসে তারা। প্রথমে তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি পরে জিতেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থেকে। ২০১৬ সালে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় জিতে মন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই শুভেন্দুও এখন বিজেপিতে।

শুভেন্দুর জেলাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। তমলুক থেকে নির্বাচিত সৌমেন মহাপাত্র এবং রামনগর থেকে নির্বাচিত বিধায়ক অখিল গিরিকে রাজ্যের মন্ত্রী করা হয়। পরে সৌমেনকে মন্ত্রিসভা থেকে ছেঁটে ফেলা হয়। অখিলের পাশাপাশি পাঁশকুড়া (পূর্ব) বিধানসভা থেকে নির্বাচিত বিপ্লব রায়চৌধুরী মৎস্য মন্ত্রী হন। এ বার বাদ গেলেন অখিল। তাঁর পরিবর্তে জেলা থেকে তাই নতুন কারও মন্ত্রিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

আরও পড়ুন
Advertisement