Jhargram Footpath Encroachment

ফুটপাতের দখলমুক্তি, শুরু দায় ঠেলাঠেলি

শহরের পাঁচ মাথা মোড় থেকে সুভাষ চক হয়ে স্টেশন পর্যন্ত ফুটপাত ও রাস্তা জবরদখল হয়ে গিয়েছে। তা মুক্ত করতে ব্যর্থ পুরসভা ও পূর্ত দফতর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৯:০৪
ঝাড়গ্রামের সুভাষ চক সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে হয়েছে দোকান। নিজস্ব চিত্র

ঝাড়গ্রামের সুভাষ চক সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে হয়েছে দোকান। নিজস্ব চিত্র

জবরদখল হওয়া ফুটপাত মুক্ত করার দায়িত্ব কার? অরণ্য শহরে এ নিয়ে পুরসভা ও পূর্ত দফতরের চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

Advertisement

গত সোমবার নবান্নের বৈঠকে ফুটপাত দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও ঝাড়গ্রামে ফুটপাত দখল মুক্ত করতে গিয়ে শুরু হয়েছে জটিলতা। এ দিকে, প্রতিদিন একটু একটু করে ফুটপাথ ও রাস্তা চুরি যাচ্ছে। সরকারি জায়গা দখল করে গজিয়ে উঠছে নানা দোকানপাট। হাঁটাচলাই করা দায়। সাইকেল ও মোটরবাইক চালাতে হচ্ছে প্রতি পদে সতর্ক হয়ে। একটু অসর্তক হলেই বিপদ। দুর্ঘটনা হচ্ছেও। কয়েক মাস আগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে একটি দোকানের চালা ভেঙেছিল গাড়ি।

শহরের পাঁচ মাথা মোড় থেকে সুভাষ চক হয়ে স্টেশন পর্যন্ত ফুটপাত ও রাস্তা জবরদখল হয়ে গিয়েছে। তা মুক্ত করতে ব্যর্থ পুরসভা ও পূর্ত দফতর। ২১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের ঝাড়গ্রাম শহরে পিচ, ক্রংকিট ও কাঁচা মিলিয়ে মোট ২২০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০ কিলোমিটার রাস্তা পূর্ত দফতরের দায়িত্বে রয়েছে। বাকিটা পুরসভা ও জেলা পরিষদের অধীন। পাঁচমাথা মোড় থেকে স্টেশন যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে অজস্র জবরদখল রয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে ভীষণই সমস্যা হয়। এই রাস্তাটি পূর্ত দফতরের অধীন।

শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথা মোড় থেকে সুভাষ পার্ক মোড় হয়ে শিব মন্দির পর্যন্ত এবং সুভাষপার্ক মোড় থেকে স্টেশন পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে তিন ফুট চওড়া করে মোট ১৫৫৭ ফুট লম্বা ফুটপাত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন ফুটপাত তো নেই-ই, এমনকি রাস্তাও দখল হয়ে গিয়েছে। অথচ এই রাস্তার ধারে রয়েছে জেলা আদালত ও জেলাশাসকের কার্যালয় সহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়। বেশিরভাগ দোকান ফুটপাতের উপরে মালপত্র রেখে ব্যবসা করে। কিছু ঠেলাগাড়িতে রাস্তার উপর ফল ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি হয়। নিজেদের রুটিরুজির স্বার্থে শহরের হকাররা বেশিরভাগ রাস্তাগুলিকে হাঁটাচলার অযোগ্য করে তুলেছেন বলে অভিযোগ।

এখন এর বিহিত করবে কে, তা নিয়েই শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি।ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান কবিতা ঘোষ বলছেন, ‘‘দখল হওয়া জায়গা পুরসভার নয়। পুরোটাই পূর্ত দফতরের। আমরা বারবার বলার পরও সুরাহা হয়নি।'' কবিতা আরও জুড়ছেন, ‘‘এ বার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জবরদখল সরানোর জন্য বলব।’’ জেলা পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মৃত্যঞ্জয় পালের বক্তব্য, ‘‘জেলা প্রশাসন যেভাবে নির্দেশ দেবে সেই রকম পদক্ষেপ করা হবে।’’

শহরবাসী অবশ্য জেরবার। একাংশ বাসিন্দার অভিযোগ, রাস্তার দু’ধারে ফুটপাত জবরদখল হয়ে যাওযায় ট্রাফিক ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শহরের পাঁচমাথা মোড়, শিবমন্দির মোড়, বাছুরডোবা পেট্রলপাম্প মোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে যান শাসন করে ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা। কিন্তু ওই সব এলাকায় যে হারে জবরদখল রয়েছে এবং রাস্তায় জিনিসপত্র রেখে হকাররা বিক্রিবাটা করেন, তাতে প্রবল যানজট হয়। পাঁচমাথা মোড় থেকে উড়ালপুলে ওঠার রাস্তাতেও যানজটে ভোগান্তি বাড়ে।

অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও ঝাড়গ্রাম শহরে জবরদখল হটাতে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই। তবে মহকুমা শাসক (ঝাড়গ্রাম সদর) শুভ্রজিৎ গুপ্ত বলছেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement