Tajpur Sea Beach

ঢেউয়ের তোড়ে তাজপুরে ভাসল হোটেল, দোকান! ভাঙনে আতঙ্কিত পর্যটক থেকে স্থানীয়েরা

সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস এবং ভাঙনের জেরে তাজপুরের সৈকতে আসা পর্যটকদের গাড়ি রাখার জন্য যে পার্কিংয়ের জায়গা ছিল, সেটিও ভেঙে গিয়েছে। এখন গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা কোথায় হবে, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
তাজপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ২২:৩৯
TAJPUR

তাজপুরে ঢেউ আর ভূমিক্ষয়ে ভেসে এবং ভেঙে যাওয়া দোকান। —নিজস্ব চিত্র।

সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে ভাঙনের কবলে তাজপুর সমুদ্রসৈকতের বিস্তীর্ণ এলাকা। মঙ্গলবার জোলের তোড়ে ভাসল কুড়িটির বেশি হোটেল এবং দোকান। এক দিকে কটাল, তার সঙ্গে নিম্নচাপ এবং পুবালি হাওয়ার দাপটে তীব্র সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস দেখা দিচ্ছে দিঘা-সহ পার্শ্ববর্তী উপকূল এলাকাগুলিতে। যার ফলে ব্যাপক ভাঙনের কবলে তাজপুর পর্যটনকেন্দ্র। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত দু’তিন দিনে জলধা থেকে পূর্ব দিকে তাজপুরের ‘ফ্রেন্ডসগলি’ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সমুদ্রপার ভেঙে গিয়েছে। এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমুদ্রপারে থাকা বেশ কিছু অস্থায়ী খাবারের দোকান-হোটেল। প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে রুজিরুটি খুইয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ীদের একাংশ।

Advertisement

ছুটির মরসুমে কলকাতা এবং শহরতলির পাশাপাশি রাজ্যের ভ্রমণপিপাসু বাঙালিদের কাছে দিঘার জনপ্রিয়তা অন্য রকম। তবে বর্তমানে দিঘার পাশাপাশি মন্দারমনি, তাজপুর, শঙ্করপুরের মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও চোখে পড়ার মতো ভিড় হচ্ছে। ইট-পাথরের জঙ্গলের বাইরে কয়েক দিন কাটানোর জন্য পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের জায়গা তাজপুর। অন্য সমুদ্রসৈকতের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নিরিবিলি এই পর্যটনস্থানে দিন কয়েক ঘুরে যান অনেকেই। তবে রাজ্য সরকারের নির্দেশে এখনও পর্যন্ত তাজপুর সৈকত এলাকায় বড় এবং ভারী নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই কারণে এই এলাকার পর্যটকদের রসনা তৃপ্তি করতে সমুদ্রতটে অস্থায়ী কিছু হোটেল-দোকানপত্র রয়েছে। গত দুই-তিন দিনে এমনই প্রায় কুড়ি থেকে পঁচিশটি অস্থায়ী দোকানের অস্তিত্ব সঙ্কটে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস এবং ভাঙনের জেরে তাজপুরের সৈকতে আসা পর্যটকদের গাড়ি রাখার জন্য যে পার্কিংয়ের জায়গা ছিল, সেটিও ভেঙে গিয়েছে। এখন গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা কোথায় হবে, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

ভাঙন দেখে উদ্বিগ্ন পর্যটকেরা। তাজপুরে বেড়াতে এসে অনেকেই জানাচ্ছেন, গাড়ি রাখার জায়গার অভাবের কথা। খাওয়াদাওয়ার দোকানগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অবিলম্বে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও একই দাবি। তাঁরা বলছেন, মন্দারমণিতে মেরিন ড্রাইভ-সহ সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলিকে যে ভাবে বাঁধানো হয়েছে, সে ভাবেই তাজপুরের সৈকত বেঁধে দেওয়া হলে এই ভাঙন কিছুটা প্রতিরোধ করা যাবে।

ইতিমধ্যে সমুদ্র পাড়ে ভাঙনের খবর পেয়ে এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছেন রামনগর-১ ব্লকের বিডিও-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকাগুলিতে ভাঙন প্রতিরোধ করতে কাঠের বল্লি, বোল্ডার, বালির বস্তা ইত্যাদি ফেলা হয়েছিল। তবে জলের তোড়ে সে সবই ভেসে গিয়েছে। এখন নতুন করে বাঁধের মেরামত করার জন্য সেচ দফতর-সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তপন বড়াই বলেন, ‘‘তাজপুর-জলধা থেকে একেবারে মোহনা পর্যন্ত সমুদ্রপাড়ের বিপজ্জনক অবস্থা। এই অংশটি কংক্রিট দিয়ে বাঁধাতে হবে। আমরা সেচ দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement