Saline Controversy

জেলায় আগেও আরএল-এ অসুস্থ প্রসূতি!

স্যালাইন নিয়ে সেই সময় স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement
গোপাল পাত্র
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৩১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মাস দেড়েক আগে এগরা মহকুমা হাসপাতালের এক প্রসূতিকে রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়ার পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। কর্তব্যরত চিকিৎসক তখন দ্রুত হাসপাতালে থেকে রোগীকে মেদিনীপুরে এক নার্সিংহোমে ভর্তি করে নিজের টাকায় চিকিৎসা করে সুস্থ করেছিলেন। বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

স্যালাইন নিয়ে সেই সময় স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যভবন থেকে মৌখিক ভাবে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল-এর রিঙ্গার্স ল্যাকটেট প্রসূতিদের যতটা সম্ভব কম ব্যবহারের নির্দেশ এসেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। কিন্তু আরএল অত্যাবশ্যক ওষুধ। দিতেই হয়। অথচ, সেই সময় সরকারি টাকায় অন্য সংস্থার রিঙ্গার্স বাইরে থেকে কেনার নির্দেশ ছিল না। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রসূতির বাড়ির লোককে টাকা দিয়ে বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে দিতে বলতেন চিকিৎসকেরা। বিতর্কিত সংস্থার রিঙ্গার্স ব্যবহার না করে রেখে দেওয়া হত। রোগীদের বাঁচাতে সেই সময় থেকে জেলার বেশকিছু মহকুমা হাসপাতাল বিতর্কিত স্যালাইনের ব্যবহার নব্বইভাগ কমিয়ে দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।

বিতর্কিত রিঙ্গার্স ল্যাকটেট নিয়ে অনেকদিন থেকেই যে অভিযোগ আসছিল তা স্বীকার করেছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই স্যালাইনের কার্যকারিতা নিয়ে নিয়মিত অভিযোগ আসছিল। চিকিৎসকদের বলা হয়েছিল, কোথাও যদি স্যালাইনে সমস্যা হয় তা হলে যেন তার ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়। তবে ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধের সরকারি নির্দেশ ছিল না বলে একাংশ রোগী ও প্রসূতির ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করা হত।’’

গত ডিসেম্বর মাসে এগরা মহকুমা হাসপাতালে শিশুর জন্ম দেওয়ার পরেই এক প্রসূতিকে আরএল স্যালাইন দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, স্যালাইন দেওয়ার পরেই প্রসূতির শরীরে কাঁপুনি শুরু হয় ও শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি হতে থাকে। হাসপাতালে সেই রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তখন নিজের টাকায় তাঁকে মেদিনীপুরে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেন বলে খবর। সেই সময়ে আরএল স্যালাইনের কারণেই ওই এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে মনে করেছিলেন চিকিৎসকেরা। এগরা মহকুমা হাসপাতাল থেকে তমলুক জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতর রিপোর্ট করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে।

এত কিছু পরেও সেই সময় ওই স্যালাইনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু স্যালাইনের বিপদ বুঝতে পেরে জেলার একাধিক হাসপাতাল সেই সময় থেকে তার ব্যবহার নব্বইভাগ কমিয়ে দিয়েছিল। বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে রোগীদের দেওয়া হচ্ছিল। সরকারি খাতায় আরএল স্যালাইনের হিসেব ঠিক রাখতে একাধিক হাসপাতাল বিতর্কিত স্যালাইন বাথরুমে ঢেলে ফেলত বলেও অভিযোগ।

Advertisement
আরও পড়ুন