Motor Bike Tourism

জনপ্রিয়তা বাড়ছে বাইক-টুরিজ়মের

বাইকের চালক ও গাইড সৌরভ দাস, মৃন্ময় মাহাতো, আব্দুল কাঞ্চন, সঞ্জিত কর্মকার জানাচ্ছেন, অচেনা জায়গাগুলি দেখার পর ভীষণই খুশি হচ্ছেন পর্যটকরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৪
বেলপাহাড়িতে পর্যটককে পিছনে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন গাইড।

বেলপাহাড়িতে পর্যটককে পিছনে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন গাইড। নিজস্ব চিত্র।

গাড়ির পথে পাহাড়-প্রকৃতির যতটুকু রূপ দেখা যায়, তার বাইরেও রয়েছে আদি অকৃত্রিম অদেখা প্রকৃতি! রয়েছে ঝর্না পথ, পাহাড় ঘেরা উপত্যকা, টিলার উপর জনজাতির কুটির, যেখানে এখনও বিচরণ করে ময়ূর-ময়ূরী! চড়াই-উতরাইয়ের সবুজের মাঝে এক অন্য বেলপাহাড়িকে দেখতে হলে ভরসা মোটরবাইক। পর্যটনের মরসুমে বেলপাহাড়িতে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে বাইক-ট্যুরিজ়ম।

Advertisement

পর্যটকদের বাইকে চাপিয়ে আঁকা-বাঁকা সরু ঝোপঝাড়ের পাহাড়ি পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গড়পাহাড়, কুলাড়ডাহি, রাঙামাটি, ডররা, সীতাপুর, বুরুডিহি, বুড়িশোল, কাঁকড়িঝর্না, ডাকাই, ছুপাঘাটি, কোটুচুয়া, মাজগেড়িয়া, বীরমাদল, ডাহুকখোলা, কেতকির মতো অজানা সব জায়গায়। যেখানে দিগন্ত মিশছে পাহাড়ের কোলে। আবার ধোবাকাচার উপত্যকা অঞ্চলটি দেখলে মনে হবে, এটা বুঝি কাশ্মীরের কোনও জায়গা। যতদূর চোখ যায় কেবল ঢেউ খেলানো বাবুই ঘাসের চাদর। দূরে চারপাশ পাহাড়ে ঘেরা। পর্যটকরা নিজেরা বাইক চালিয়ে যেতে পারেন। সঙ্গে গাইড নিয়ে। আবার গাইডের বাইকের পিছনে বসেও অচেনা বেলপাহাড়ি দর্শনে যাওয়া যাবে।

বেলপাহাড়িতে একটি বেসরকারি সংস্থা এ জন্য বাইক ভাড়া দিচ্ছে। ওই সংস্থার কর্ত্রী ইন্দ্রাণী বালা বলছেন, ‘‘আপাতত তিনটি বাইকে এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। সারাদিনে চলা কিলোমিটারের হিসেবে পর্যটকদের থেকে নেওয়া হয় ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা। স্থানীয় যুবকরাই বাইকের চালক ও গাইডের কাজ করেন।’’ ইন্দ্রাণী জানাচ্ছেন, পাহাড়ি পথে বাইকের জ্বালানি খরচ বেশি। তার উপর চালক অথবা গাইডের চার্জ বাবদ দৈনিক ৫০০ টাকা। তাতে সংস্থার লাভ যৎসামান্যই। পর্যটকরা যাতে অচেনা বেলপাহাড়িকে দেখতে বেশি উৎসাহিত হন সেই লক্ষ্যেই এমন উদ্যোগ। যে পর্যটকরা নিজেরা বাইক চালাবেন, তাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।

বাইকের চালক ও গাইড সৌরভ দাস, মৃন্ময় মাহাতো, আব্দুল কাঞ্চন, সঞ্জিত কর্মকার জানাচ্ছেন, অচেনা জায়গাগুলি দেখার পর ভীষণই খুশি হচ্ছেন পর্যটকরা।
বেলপাহাড়ি ট্যুরিজ়ম অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র বিধান দেবনাথ বলছেন, ‘‘গত এক বছরে বাইকে করে বেলপাহাড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। তখন থেকে গাইড দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি যাঁরা গাড়িতে বেড়াতে আসছেন, তাঁরা গাড়ি রেখে বাইক ভাড়া নিয়ে অজানা-অচেনা বেলপাহাড়ি ঘুরে দেখছেন।’’ পর্যটকদের কেউ কেউ অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করলে তাঁদের উখুলডোবার জঙ্গল ও পাহাড়ি নদীপথ, বেঙবুতা ও ডাঙরডিহার ধানঘোরি, হারেমদার দুর্গম পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হয়। দলদলি এলাকাটি যেন ঝাড়গ্রামের অ্যামাজন। দিনের বেলাতেও জঙ্গলপথে সূর্যের আলো ঢোকে না। ওই পথ বাইকে ঘুরে এসে উচ্ছ্বসিত কলকাতার আকাঙ্ক্ষা মুখোপাধ্যায়, দীপ্তেন্দু দত্ত, ব্যারাকপুরের গোবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা বলছেন, ‘‘বেলপাহাড়িতে এত অপরূপ নৈসর্গ লুকিয়ে রয়েছে জানা ছিল না! আমাদের বেড়াতে আসা সার্থক।’’

বেলপাহাড়ির বিডিও সুমন ঘোষ জানান, বছরখানেক আগে সরকারি উদ্যোগে বেলপাহাড়িতে ৪০ জন যুবককে গাইডের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement