Ram Navami

রোজার মধ্যেই রাত জেগে সেলাই মেশিনে পর পর ধ্বজা সেলাই, রামনবমীর আগে ভরসা আবু বকর

বুধবার থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০টি ধ্বজা সেলাই করে দিয়েছেন আবু। মঙ্গলবারও কয়েক জন এসেছিলেন ধ্বজা সেলাইয়ের জন্য। কাউকেই তিনি ফিরিয়ে দেয়নি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ১৪:১২
Muslim tailor stiches flags for Ram Navami in Midnapore.

আবু মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। দোকান মিরবাজার এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

দিন পেরিয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে রাত। হাত ঘুরিয়ে এবং পায়ে চাপ দিয়ে সেলাই মেশিনে ঘটর ঘটর আওয়াজ চলছেই। রাতের আগে কাজ শেষ করতেই হবে। রামনবমীর ধ্বজা তুলে দিতে হবে অনেকের হাতে। কারণ, কথা দিয়েছেন আবু বকর।

বৃহস্পতিবার রামনবমী উপলক্ষে উৎসবমুখর সারা দেশ। সেই ব্যস্ততার আঁচ এসে পড়েছে পেশায় দরজি আবুর উপরেও। আবু মেদিনীপুর শহরের অলিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। দোকান মিরবাজার এলাকায়। রামনবমী উপলক্ষে হিন্দুদের ধ্বজা লাগানোর নিয়ম রয়েছে। তাই অনেকেই বাজার থেকে ধ্বজা কিনে এনে সেলাই করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে। বুধবার থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০টি ধ্বজা সেলাই করে দিয়েছেন আবু। মঙ্গলবারও কয়েক জন এসেছিলেন ধ্বজা সেলাইয়ের জন্য। কাউকেই তিনি ফিরিয়ে দেয়নি। কথা রাখতে বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা পর্যন্ত টানা ধ্বজা সেলাই করে গিয়েছেন। দম ফেলার ফুরসতটুকুও পাননি। রমজান মাস চলার কারণে বুধবার সন্ধ্যায় রোজা খোলার সময়টুকু বাদ দিয়ে একটানা ধ্বজা সেলাইয়ের কাজ করে গিয়েছেন আবু। তাঁর কথায়, ‘‘রাত দেড়টা পর্যন্ত কাজ করেছি। যে হেতু বৃহস্পতিবার সকালেই ধ্বজা তোলার রীতি রয়েছে তাই অনুরোধ ফেলতে পারিনি। তবে সবারই অনুরোধ তাড়াতাড়ি সেলাই করে দেওয়ার।’’

Advertisement

মিরবাজারের বাসিন্দা সুরজিৎ পিড়ি বলেন, ‘‘আবু স্থানীয় ক্লাবের সদস্য। সব কিছুতেই যুক্ত থাকে। রাত জেগে ও রামনবমীর ধ্বজা সেলাই করে দিয়েছে।’’ পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ‘‘মেদিনীপুর সম্প্রীতির শহর। এখানে সবাই মিলেমিশে থাকে, কাজ করে।’’

বৃহস্পতিবার রাত জেগে কাজ করে কথা রেখেছেন আবু। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কিছুটা হলেও চাপ কম রয়েছে। দোকানে বসে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সম্প্রীতির বার্তা দেন তিনি। আবু বলেন, ‘‘শহরে আমরা মিলেমিশে থাকি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’’

আরও পড়ুন
Advertisement