Food Testing Laboratory

খাদ্য পরীক্ষাগার নেই জেলায়, ভরসা কলকাতা

খাবারে ভেজাল বা ক্ষতিকারক পদার্থ রয়েছে কি না, তা জানতে খাবারের গুণমান যাচাই জরুরি। জেলায় সব মিলিয়ে ৬ জন ফুড সেফটি অফিসার (এফএসও) রয়েছেন।

Advertisement
বরুণ দে
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৪
ভ্রামমাণ ল্যাবরেটরি।

ভ্রামমাণ ল্যাবরেটরি। —নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম মেদিনীপুরে কোনও খাদ্য পরীক্ষাগার (ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি) নেই। তাহলে এখানে খাবারের মান যাচাই হয় কী ভাবে? ফুড সেফটি অফিসাররা খাদ্যের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার সরকারি খাদ্য পরীক্ষাগারে পাঠান। কলকাতার এন্টালির পরীক্ষাগারে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খাদ্যের নমুনাই পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট আসতে অনেকটা সময় গড়িয়ে যায়।

Advertisement

সমস্যা সমাধানে জেলায় একটি ভ্রাম্যমাণ খাদ্য পরীক্ষাগার চালু হতে চলেছে। পোশাকি নাম ‘মোবাইল ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি’, সংক্ষেপে ‘এমএফটিএল’। গাড়িটি ইতিমধ্যে জেলায় এসেছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘ভ্রাম্যমান পরীক্ষাগার শীঘ্রই চালু হবে।’’ চালক ছাড়াও গাড়িতে একজন ফুড সেফটি অফিসার ও আরেকজন ফুড অ্যানালিস্ট থাকবেন। জেলায় ফুড সেফটি অফিসার থাকলেও ফুড অ্যানালিস্ট নেই। এই পদে দ্রুত নিয়োগ হওয়ার কথা। আগামীতে মেদিনীপুরে স্থায়ী খাদ্য পরীক্ষাগার চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।

খাবারে ভেজাল বা ক্ষতিকারক পদার্থ রয়েছে কি না, তা জানতে খাবারের গুণমান যাচাই জরুরি। জেলায় সব মিলিয়ে ৬ জন ফুড সেফটি অফিসার (এফএসও) রয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক ও ৭টি শহর। ৬ জনের প্রত্যেককে তিন-চারটি করে ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। তাঁরা ব্লকে নিয়মিত পরিদর্শনে যান বলেঅ দাবি। খাবারের গুণগত মান দেখেন, সংশয় থাকলে সংশ্লিষ্ট খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেন। জেলাস্তরে মাসে একবার পর্যালোচনা বৈঠক হয় বলেও দাবি।

ভ্রাম্যমাণ খাদ্য পরীক্ষাগার চালু হলে জেলার খাদ্যের নমুনা আর কলকাতায় পাঠাতে হবে না। গাড়িটি নিয়ে হাটে-বাজারে কিংবা ফুটপাতের দোকানে পৌঁছে অতি দ্রুত খাবারের গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখা যাবে। এই গাড়িতে যে সব সরঞ্জাম রয়েছে, তা দিয়ে তেল, জল, দুধ, মশলা এমনকি আনাজের মানও পরীক্ষা করা সম্ভব। দেখা সম্ভব কোনও ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে কি না। ফুটপাতের খাবারের প্রতি অনেকের একটা তীব্র আকর্ষণ রয়েছে। বিশেষ করে মফফসলে এই সব দোকান রমরমিয়ে চলে। ফুটপাতে ‘বিপজ্জনক’ খাবারের পসরাও থাকে। ভ্রাম্যমাণ খাদ্য পরীক্ষাগার চালু হলে ফুটপাতের খাবারের মান যাচাইয়ে আরও জোর দেওয়া হবে বলেই জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন।

একাংশ জেলাবাসীর অনুযোগ, জেলায় খাদ্যদ্রব্যের মান যাচাইয়ের বিষয়টি অবহেলিতই থাকে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের অবশ্য দাবি, নিয়মিত পরিদর্শন হয়। কোথাও খাবারের মান নিয়ে নালিশ উঠলে নমুনা সংগ্রহ করে তার মান পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। খাদ্য সুরক্ষার বিষয়ে আমজনতাকে নানা ভাবে সচেতনও করা হয়।

ত্রুটিপূর্ণ নমুনা মিললে, সংশ্লিষ্ট দোকানের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়? জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘আইনানুযায়ী জরিমানা করা হয়। প্রয়োজনে ফুড লাইসেন্স বাতিল করা হয়।’’

Advertisement
আরও পড়ুন