শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা কুণাল ঘোষের। —ফাইল চিত্র।
মিটেও মিটছে না নন্দীগ্রামের ‘লড়াই’। বুধবার ‘শহিদ দিবস’ উপলক্ষে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে বিঁধলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। ‘শহিদ দিবস’-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে নিশানা করে কুণালের প্রশ্ন, ‘‘তুমি তো এত দিন হিন্দু হিন্দু করেছ। এত দিন মুসলমানদের জেহাদি বলেছ। তুমি যে শহিদবেদিতে মালা দেবে সেখানে তো মুসলমানেরও রক্ত আছে। কোন লজ্জায় তুমি এখানে মালা দিতে আসবে?’’ নন্দীগ্রামে ‘শহিদ দিবস’কে সামনে রেখে কর্মসূচি রয়েছে শুভেন্দুরও। সেই মঞ্চ থেকে কুণালের আক্রমণের কী উত্তর রাজ্যের বিরোধী দল নেতা দেন তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রাম পুনর্দখলের অভিযান চালানোর অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যের তৎকালীন শাসকদল সিপিএমের বিরুদ্ধে। ‘অপারেশন সূর্যোদয়’-এর সময় ননদীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ১০ জন ‘নিখোঁজ’। সেই ঘটনাকেই ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে তৃণমূল। বুধবার নন্দীগ্রামের মহেশপুরের করপল্লিতে সেই মঞ্চ থেকে শুভেন্দুকে নিশানা করে কুণাল তোপ দাগেন, ‘‘কোন লজ্জায় তুমি এখানে মালা দিতে আসবে?’’ একইসঙ্গে শুভেন্দুকে ‘বেইমান’, ‘অকৃতজ্ঞ’ বলেও উল্লেখ করেন কুণাল।
বুধবার ওই মঞ্চে ছিলেন নন্দীগ্রামের প্রাত্তন বিধায়ক ফিরোজা বিবিও। বর্তমানে তিনি পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় সেই ফিরোজাকে ‘শহিদের মা’ তকমা দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তাঁকে দেখিয়ে কুণাল বলেন, ‘‘এখানে ফিরোজা বিবি রয়েছেন। তাঁকে আমরা ‘শহিদ মাতা’ বলি। তুমি তাঁকে কি বলবে ‘জেহাদির মা’? কারণ ওঁর ছেলে মুসলমান ছিল? এই সব মানুষ নরকের কীট।’’ শুভেন্দুকে নন্দীগ্রাম থেকে ‘উচ্ছেদ’ করার আহ্বানও জানিয়েছেন কুণাল। বিজেপি নেতার উদ্দেশে কুণাল আরও বলেন, ‘‘তোমাকে রাজনীতিতে জন্ম দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোমার গোটা গুষ্টিকে জন্ম দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোমরা সমস্তটা ভোগ করেছ। তুমি তোমার মায়ের পিঠে ছুরি মেরেছো। তুমি বেইমান, তুমি গদ্দার।’’
২০০৭ সালের ওই ঘটনাকে সামনে রেখে বরাবরই তৃণমূল ১০ নভেম্বর ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে। তবে গত বছর শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকে আলাদা কর্মসূচি পালিত হয়। গত বার নন্দীগ্রামের গোকুলনগর হাইস্কুলের মাঠে আলাদা সভা করেছিলেন তিনি। তবে বুধবার তৃণমূলের মতো করপল্লিকে নিশানা করেছেন শুভেন্দুও। সেই কর্মসূচি থেকে শুভেন্দু কী উত্তর দেন সে দিকে নজর সকলেরই।