Ghatal Master Plan

দেব মন্তব্যে মমতার প্রশ্নে সচিব

ত্রাণ বিলিতে তুলনা করলেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে দুই সরকারকে একই আসনে রেখেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হয়নি মমতার জন্য। আর আগের সিপিএমের জন্য।’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:১৫
ত্রাণ বিলি করছেন শুভেন্দু অধিকারী।

ত্রাণ বিলি করছেন শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।

ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বাস্তবায়ন নিয়ে কি সমন্বয়ের অভাব দেখা দিচ্ছে!

Advertisement

বন্যা কবলিত ঘাটালে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বছর দুয়েকের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। রবিবার দ্বিতীয় দফায় ঘাটালে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ দেব জানিয়েছিলেন, প্রকল্পটি শেষ হতে চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, দেবের মন্তব্য কানে পৌঁছেছে মমতার। সোমবার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে বর্ধমান গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকও করেন তিনি।

প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে সেচ দফতরের সচিব মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়েন। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান ২০২৯ সালে শেষ হবে, এ ধরনের তথ্য দেবকে দেওয়া নিয়েই মমতা প্রশ্ন তোলেন বলে সূত্রের দাবি। এই প্রসঙ্গে বৈঠকে মমতা জানান, ২০২৬ সাল নাগাদ ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শেষ করা হবে।

প্রসঙ্গত, এ বার লোকসভা ভোটে দেবকে পাশে নিয়ে মমতা জানিয়েছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্প রাজ্যই বাস্তবায়িত করবে। লোকসভা ভোটের প্রচারে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেবও। ভোট মেটার পর বর্ষা আসতে স্বাভাবিক ভাবেই উঠেছে সেই প্রকল্পের কথা। আগামী বিধানসভা নির্বাচন ২০২৬ সালে। এখন থেকে দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার অর্থ তাই স্পষ্ট। তবে যদি প্রকল্প শেষ করতে চার-পাঁচ বছর লাগে সে ক্ষেত্রে বিষয়টি দাঁড়ায় ২০২৮-’২৯-এ। পরের লোকসভা নির্বাচন ২০২৯-এ।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিন ঘাটালে গিয়েছিলেন। বন্যা ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আর যাই হোক সিপিএম ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করেনি। যেটা তৃণমূল সরকার করছে। বাম আমলে ‘থ্রি ম্যান’ কমিটি ছিল। বিরোধী দলনেতা, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং বিডিও-র প্রতিনিধি ঘুরে ঘুরে ত্রাণ দিতেন। এখন শুধু বিজেপি করার অপরাধে বিজেপি বিধায়ককে কোনও রকম সহযোগিতা করা হয়নি।’’ এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা অশোক সাঁতরার মন্তব্য, ‘‘ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি প্রসঙ্গে শুভেন্দুবাবু ঠিক কথাই বলেছেন। তবে এ কথা তাঁর মুখে মানায় না। কারণ, বিজেপিও ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করে। দু’দলের নীতিগত কোনও পার্থক্য নেই।’’

ত্রাণ বিলিতে তুলনা করলেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে দুই সরকারকে একই আসনে রেখেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হয়নি মমতার জন্য। আর আগের সিপিএমের জন্য।’’ তবে এ ক্ষেত্রে সিপিএমের ব্যর্থতার বিশদে বর্ণনা করেননি শুভেন্দু। কিন্তু মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতার কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘মমতা চাইলে সাড়ে তেরো বছরে করত। মাস্টার প্ল্যানের এখন কোথায় কী? এখনও জমি আধিগ্রহণ হয়নি। কে জমি দেবে? এই দেউলিয়া সরকারকে কে জমি দেবে।’’ এরপরই শুভেন্দুর ঘোষণা, ‘‘২০২৬ সালে বিজেপি সরকার হবে। বিজেপি মাস্টার প্ল্যান করবে।” যদিও বর্ধমানে গিয়ে এ দিন মমতা ফের দাবি করেছেন, ‘‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজে ৪০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে, ডিপিআর তৈরি করা হচ্ছে। তিন বছর সময় লাগবে কাজটা করতে। এটা অনেক দিন পড়ে আছে, কেন্দ্র করেনি। আমরা করব।’’

এ দিন ঘাটালের রথিপুর এলাকায় যান শুভেন্দু। সেখানে জল নেমে গিয়েছে। রথিপুরের একটি ভেতরের এলাকায় যান। তারপর বিশালাক্ষী মন্দিরে ত্রাণ তুলে দেন। ত্রিপল-সহ শুকনো খাবার ও নানা সামগ্রী ছিল। সেখান থেকে তিনি দাসপুরে রওনা হয়ে যান। সেখানে রানিচকে কয়েকটি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুভেন্দু বাড়ির মালিকদের সাহায্যের আশ্বাস দেন।

আরও পড়ুন
Advertisement