Illegal Embankment

খাল অবরুদ্ধ করে ভেড়ি, চাষে বাধা

পটাশপুরের পালপাড়া ভেড়ি এবং চিস্তিপুর-২ অঞ্চলের জলাভূমির জল নিকাশির জন্য কয়েক দশক আগে এই পানি নালা খাল কাটা হয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫১
খালে বাঁধ দিয়ে ভেড়ি তৈরি করা হয়েছে।

খালে বাঁধ দিয়ে ভেড়ি তৈরি করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

বর্ষাকালে এলাকার জমা জল খাল দিয়ে নিকাশি হয়। সেই খালের মধ্যে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একের পর এক ভেড়ি। প্রশাসনের নাকের ডগায় আস্ত খাল দখল হয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ নেই। এদিকে, খাল অবরুদ্ধ হওয়ায় জমা জল বেরোতে না পেরে চাষের ক্ষতি হচ্ছে।

Advertisement

পটাশপুরের পালপাড়া ভেড়ি এবং চিস্তিপুর-২ অঞ্চলের জলাভূমির জল নিকাশির জন্য কয়েক দশক আগে এই পানি নালা খাল কাটা হয়। পালাপাড়া কলেজ সংলগ্ন প্রায় তিন হাজার হেক্টর কৃষিজমি এবং বিস্তীর্ণ নীচু এলাকার জল বর্ষাকালে এই খাল দিয়ে নিকাশি হয়। পালপাড়া জলাভূমি থেকে বেরিয়ে এই খাল ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের মতো হয়ে মংলামাড়ো বাজার দিয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে ইটাবেড়িয়া খালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই খালে আগে স্বাভাবিক ছন্দেই বৃষ্টির অতিরিক্ত জল নিকাশি হতো। মংলামাড়ো বাজারে কাছে এই খালের উপর একটি স্লুইস গেটও রয়েছে। এক সময় খালে জোয়ার-ভাটার জল আসত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, কয়েক বছর ধরে পালপাড়া ভেড়ি ও চিস্তিপুর-সহ একাধিক মৌজায় খালের মধ্যে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে একাধিক ভেড়ি তৈরি করা হয়েছে। পালপাড়া ও পালপাড়া ভেড়ি ভৌগোলিক অবস্থায়ে অনেকটাই নীচু। অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে এলাকার জলা জমিতে কোমর সমান জল জমে যায়। তবে মংলামাড়োর কাছে স্লুইস গেট তুলে জলাজমির অতিরিক্ত জল নিকাশি করে চাষের উপযোগী করা হত। এখন খালে বাঁধ দিয়ে ভেড়ি তৈরি করায় জলের স্বাভাবিক অবরুদ্ধ হয়েছে। এবার আমনের বীজ তলা প্রস্তুত হলেও চাষের জমিতে এখনও কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে আমন ধান রোপণ করতে পারছেন না কৃষকেরা।

খাল সংস্কারের দাবি ‘পানিনালা খাল সংস্কার কমিটি’ গঠন করেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা। তাঁরা জেলা সেচদফতর ও জেলা প্রশাসনের কাছে সমস্যা জানান। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি বলে দাবি। পানিনালা খাল দখলের ফলে অধিক বৃষ্টি হলে পালপাড়া-সহ কলেজে জল ঢুকে পড়ে। স্থানীয় কৃষক প্রদীপ জানা বলেন, ‘‘মাঠের জল নিকাশি না হওয়ায় কয়েক হাজার কৃষক আমন ধান চাষ করতে পারছেন না। প্রতি বছর আমন চাষ না হওয়ায় অন্ন সঙ্কট তৈরি হয়।’’ পানিনালা খাল সংস্কার কমিটি উপদেষ্টা পরেশচন্দ্র আদক বলেন, ‘‘শাসক দলের মদতে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি খাল দলক করে ভেড়ি তৈরি করছেন। জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।’’

এ ব্যাপারে পটাশপুর-১ এর বিডিও বিধানচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘খাল অবরুদ্ধ করার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কৃষকদের দাবি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা থেকে নির্দেশ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement