পটাশপুরে ঘর থেকে উদ্ধার যুবকের দেহ। প্রতীকী ছবি।
গলার নলি কাটা অবস্থায় যুবকের দেহ উদ্ধার হল পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে। মঙ্গলবার ভোরে এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যুবকের পাশেই শুয়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। কখন, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটেছে টের পাননি বলেই দাবি করেছেন ওই বধূ। মৃত যুবকের নাম দীপঙ্কর গিরি (৩৪)। পটাশপুর ২ ব্লকের পচেট গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে যুবকের স্ত্রী লক্ষ্মী গিরিকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে আচমকাই ওই যুবকের স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভাঙে প্রতিবেশীদের। তাঁরা ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, গলার নলি কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছে দীপঙ্করের দেহ। তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মীর দাবি, স্বামীর পাশে ঘুমিয়ে থাকলেও এই বিষয়ে কিছুই টের পাননি। কিন্তু তাঁর এই দাবি মানতে নারাজ স্থানীয়েরা। প্রতিবেশীদের দাবি, লক্ষ্মীর প্রাক্তন স্বামীই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আর সেই ঘটনা চাপা দিতে চাইছেন মহিলা। তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল দীপঙ্করের। এক সন্তানকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। তার পরই স্বামীপরিত্যক্তা লক্ষ্মীকে বিয়ে করেন দীপঙ্কর। লক্ষ্মীর ৬ বছরের এক সন্তান রয়েছে। লক্ষ্মীর প্রাক্তন স্বামী তাঁকে পুনরায় নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চাইছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু পুরনো সম্পর্কে ফিরতে রাজি হননি লক্ষ্মী। অন্য দিকে, দীপঙ্করও তাঁর বর্তমান স্ত্রীকে ছাড়তে চাননি বলেই প্রতিবেশীদের কেউ কেউ দাবি করেছেন। তাই প্রতিশোধ নিতেই বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে দীপঙ্করের গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে।
এগরার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, ঘটনার সময় মহিলা উঠে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি গোঙানির আওয়াজ পেয়ে ছুটে এসে স্বামীকে গলা কাটা অবস্থায় ছটফট করতে দেখেন। তিনি চিৎকার করতেই সবাই ছুটে আসেন।’’ এসডিপিও জানান, ওই মহিলা আর এক জনের স্ত্রী ছিলেন। দু’বছর আগে পুরনো সংসার ছেড়ে তিনি দীপঙ্করের সঙ্গে থাকা শুরু করেন। এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে মহিলার প্রাক্তন স্বামীকে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তিনি পলাতক। মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য, গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা স্বপনকুমার ঘোড়াই বলেন, ‘‘কী কারণে খুন হয়েছে বলতে পারব না। পুলিশি তদন্তের পরে তা জানা যাবে। পরিকল্পিত ভাবে খুন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করছি।’’