Kolkata Metro

প্রবল আর্থিক সঙ্কটে মেট্রো রেল, ১০০ টাকা আয় করতে খরচ ৪৩২ টাকা, ভাড়া কি বাড়বে?

রেলের হাতে থাকা সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ ব্যবহার না হলে ওই ঘাটতি আরও তিন হাজার কোটি টাকা বেড়ে যেত। রেলের ওই আর্থিক দৈন্যের একটি বড় কারণ হল যাত্রী ভাড়া।

Advertisement
অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৪১
কলকাতা মেট্রো।

কলকাতা মেট্রো।

প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে মেট্রো রেল। একশো টাকা আয় করতে তাঁদের খরচ হচ্ছে ৪৩২ টাকার কাছাকাছি। তবে ওই বেহাল অবস্থা কেবল কলকাতা মেট্রোর নয়, সামগ্রিক ভাবে আর্থিক দৈন্যে ভুগছে অশ্বিনী বৈষ্ণবের রেল মন্ত্রক। ২০২১-২২ সালের রেলের আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত যে রিপোর্ট আজ সিএজি (কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল) সংসদে জমা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই অর্থ বর্ষে রেলের নিট ঘাটতি ১৫,০২৫ কোটি টাকা। যার ফলে আগামী দিনে প্রয়োজনে যাত্রী ভাড়ার ক্ষেত্রে সংস্কারের ইঙ্গিত আছে রিপোর্টে।

Advertisement

ওই অর্থবর্ষে ‘অপারেটিং রেশিও’ ছাপিয়ে গিয়েছে অন্য বছরগুলিকে। ২০২১-২২ সালে রেলের ‘অপারেটিং রেশিও’ দাঁড়িয়েছে ১০৭.৩৯শতাংশ। অর্থাৎ ভারতীয় রেলকে একশো টাকা আয় করতে প্রায় ১০৭ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। তার আগের বছর যেখানে ‘অপারেটিং রেশিও’ ছিল ৯৭.৪৫%। গত পাঁচ বছরেএই প্রথম একশোর ঘর ছাপিয়ে গেল তা। রেলের সতেরোটি জোনের মধ্যে ‘অপারেটিং রেশিও’-এর হিসাবে সবথেকে খারাপ স্থানে রয়েছে মেট্রো রেল। ভারতীয় রেলের হাতে থাকা একমাত্র মেট্রো রেলের অপারেটিং রেশিও (২০২১-২২) দাঁড়িয়েছে ৪৩২.১৯%। যা অবশ্য গত অর্থ বর্ষের (৬৭৭.৯০%) চেয়ে অনেকটাই কম। খারাপ ‘অপারেটিং রেশিও’-এর প্রশ্নে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর রেল (২৩২.৮৬%)। আর পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের ‘অপারেটিং রেশিও’দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৯২.৮৮%ও ৭৫.১৯%।

সিএজি রিপোর্টে বলা হয়েছে, সার্বিক ভাবেই আর্থিক স্বাস্থ্যক্ষয়ের কারণে ধুঁকছে ভারতীয় রেল। ২০২০-২১ সালে যেখানে ২,৫৪৭ কোটি টাকা লাভের মুখ দেখেছিল রেল, সেখানে ২০২১-২২-এ ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৫,০২৫ কোটি টাকায়। রেলের হাতে থাকা সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ ব্যবহার না হলে ওই ঘাটতি আরও তিন হাজার কোটি টাকা বেড়ে যেত। রেলের ওই আর্থিক দৈন্যের একটি বড় কারণ হল যাত্রী ভাড়া। পণ্য পরিবহণে রেল ভাল করলেও, যাত্রী ভাড়ায় ভর্তুকি, অন্যান্য খাত থেকে আশানুরূপ আয় না হওয়ায় বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে রেলকে।

যদিও রেলের যুক্তি, বেতন ও পেনশন খাতে অস্বাভাবিক খরচ বৃদ্ধির কারণে রেলের ঘাটতির একটি বড় কারণ। রেল মন্ত্রকের দাবি, ২০১৬-১৭ সালে যেখানে বার্ষিক পেনশন খাতে ৪০,৪৬৩ কোটি টাকা খরচ হত, ২০২১-২২ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৫১,৯৩৫ কোটিতে। এ ছাড়া নতুন লাইন নির্মাণ, ডাবলিং, ট্রাকের মেরামতি ও বন্দে ভারতের মতো ট্রেনসেট নির্মাণে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করে পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে খরচ বাড়ানো হয়েছে। এই আবহে রিপোর্টে যাত্রী ভাড়া পুনর্বিবেচনার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। রেলসূত্রের মতে, যাত্রী ভাড়ায় বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি দিতে হয় রেলকে। তাই ক্ষতি কমাতে যাত্রিভাড়ায় সংস্কার করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে রিপোর্টে।

আরও পড়ুন
Advertisement