Kolkata Municipal Election

Kolkata Municipal Election 2021: সংরক্ষণের আওতায় পুরভোটে ওয়ার্ড বদল হতে পারে তৃণমূলের বহু প্রভাবশালী কাউন্সিলরের

আইপ্যাকই বা কী রিপোর্ট দিয়েছে দলের কাছে? এমন আলাপ আলোচনা চলেছে শাসকদলের কাউন্সিলরদের মধ্যে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১ ২১:০৩
একাধিক প্রভাবশালী কাউন্সিলরের ওয়ার্ড বদলের সম্ভাবনা।

একাধিক প্রভাবশালী কাউন্সিলরের ওয়ার্ড বদলের সম্ভাবনা। ফাইল চিত্র

কলকাতা পুরসভার ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তারপরেই জল্পনা শুরু হয়েছে কোনও ওয়ার্ডে কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে। সংরক্ষণের ফলে এ বার শাসকদল তৃণমূলের অনেক প্রভাবশালী কাউন্সিলর নিজের আসনে দাঁড়াতে পারবেন না। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।

শাসক শিবিরের প্রার্থী তালিকা নিয়েই কলকাতাবাসীর আগ্রহ সবথেকে বেশি। পরবর্তী মেয়র কে? সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করা গায়ক বাবুল সুপ্রিয়, না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন ফিরহাদ হাকিম? এই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে পাড়ায় পাড়ায়। এ সবের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে বর্তমান শাসকদলের কাউন্সিলরদের। গত দেড় বছর ভোট না হওয়ায় তাঁরাই সামলেছেন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব। এ বার কি আবারও ভোটে দাঁড়ানোর টিকিট পাওয়া যাবে? আইপ্যাকই বা কী রিপোর্ট দিয়েছে দলের কাছে? এমন আলাপ আলোচনা চলেছে শাসকদলের কাউন্সিলরদের মধ্যে। পুরপ্রশাসক ফিরহাদের ফের ৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

Advertisement

এমন কিছু কাউন্সিলর রয়েছেন, যাঁরা সংরক্ষণের তালিকায় থাকার কারণে নিজের ওয়ার্ড থেকে দাঁড়াতে পারছেন না। সূত্রের খবর, দলের সেই সব কাউন্সিলরের অন্য ওয়ার্ডে পুনর্বাসন দেওয়া হতে পারে। ২০১৫ সালে সংরক্ষণের আওতায় পড়ে নিজের ৩০ ওয়ার্ড ছেড়ে ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়েছিলেন মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। এ বারও ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষণের আওতায় পড়ে গিয়েছে। তাই তাঁকে পাঠানো হতে পারে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন প্রভাবশালী কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়। উত্তর কলকাতার এক প্রবীণ বিধায়ক পুরভোটে প্রার্থী হতে আগ্রহী। কিন্তু ২০১৫ সালেও প্রার্থী হয়ে একটি ওয়ার্ডে পরাজিত হওয়ার কারণে এ বার আর তাঁকে সুযোগ দিতে নারাজ দল। এ বারই প্রথম বিধায়ক হওয়ায় কলকাতার তিন কাউন্সিলরকে ফের প্রার্থী করা হবে কি না, তা নিয়ে ভাবনায় রয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ দলের ‘এক ব্যক্তি এক পদ নীতি’।

বর্তমান পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য রতন দে-র ওয়ার্ড বদলের সম্ভাবনা প্রবল। তিনি বর্তমানে ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর। ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ার কারণে তাঁকে পাঠানো হতে পারে ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মমতা মজুমদারকে টিকিট না-ও দেওয়া হতে পারে। ৯০ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা ভবানীপুর উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়কে পাঠানো হতে পারে ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি-র কারণে ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়কে প্রার্থী না-ও করা হতে পারে। একই ভাবে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য সুশান্ত ঘোষ (স্বরূপ)-এর ১০৭ নম্বর ওয়ার্ড এ বার তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। তাই পাশের ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠানো হতে পারে তাঁকে। আর ওই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর প্রাক্তন ফুটবলার শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বাদ পড়তে পারেন।

৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর পবিত্র বিশ্বাস নিজের ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে পারছেন না। তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষণের কারণে তাঁকেও পাশের কোনও ওয়ার্ডে পাঠানো হতে পারে। কলকাতা বন্দরের ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় দীর্ঘদিনের কো-অর্ডিনেটর তথা বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী থাকা প্রয়াত কলিমুদ্দিন শামসের পুত্র তৃণমূল কাউন্সিলর নিজামুদ্দিন শামসকে পাঠানো হতে পারে ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে। টিভির পর্দায় অতি পরিচিত মুখ হিসেবে গত কয়েক বছরে উঠে এসেছেন ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা যুবনেতা অরূপ চক্রবর্তী। তাঁর ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ার কারণে তাঁকে পাঠানো হতে পারেন ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে। মহিলা সংরক্ষণের কারণে ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর ঘনশ্রী বাগকে ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আনা হতে পারে। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খানের স্ত্রী রাফাত জাভেদ এ বারের ভোটে প্রার্থী না-ও হতে পারেন। তাঁর জায়গায় প্রার্থী হতে পারেন জাভেদ-পুত্র ফৈয়াজ আহমেদ খান।

৮৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে পারেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পুত্র সৌরভ বসু। ১২১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে পারেন অভিনেতা তথা তৃণমূলে যুবনেতা অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ৭৩ ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান কাউন্সিলর রতন মালাকার। কালীঘাট মন্দিরের ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মঞ্জুশ্রী মজুমদারকে প্রার্থী করা হবে না বয়সজনিত কারণে। তাঁর বদলে প্রার্থী হতে পারেন দক্ষিণ কলকাতার এক যুবনেতা। একই পরিবার থেকে একাধিক টিকিটের জমানাও শেষ হতে পারে এই পুরভোটেই। বর্তমানে ১১৬, ১১৭ ও ১১৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর রয়েছেন একই পরিবারের পিতা-পুত্র-কন্যা। এই সমীকরণও পাল্টে যেতে পারে এ বার। উল্লেখ্য, পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য তারক সিংহ ও তাঁর পুত্র অমিত ও কন্যা কৃষ্ণা কাউন্সিলর। সূত্রের খবর, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বয়স ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তি প্রাধান্য পাবে শাসকদলে। সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক ৫০ শতাংশ আসনে নতুন প্রার্থী দাঁড় করানোর সুপারিশ করেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।

Advertisement
আরও পড়ুন