মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রশাসনিক স্তরে বেশ কিছু রদবদল করল নবান্ন। তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হল পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমারকে কারা প্রশাসন দফতরে সরিয়ে দেওয়া। রাজেশ পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব থাকার পাশাপাশি রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদের সদস্য-সচিবও ছিলেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজেশকে পরিবেশ দফতর থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল প্রশাসনের শীর্ষমহল। আপাতদৃষ্টিতে পরিবেশ দফতরের তুলনায় কারা দফতর বেশি ‘ওজনদার’ বলেই পরিগণিত। সেই নিরিখে রাজেশের ‘উন্নতি’ই হল বলা যায়। কিন্তু প্রশাসনের অন্দরের খবর, মূল লক্ষ্য ছিল রাজেশকে পরিবেশ দফতর থেকে সরানো। সম্প্রতি শাসক শিবিরের উচ্চমহলে সমীকরণের যে বদলের কথা শোনা যাচ্ছে, রাজেশের বদলি সেই সূত্রেই বলে প্রশাসনিক মহলের একটি অংশের দাবি। ওই অংশের আরও বক্তব্য, এর আগে কলকাতা পুলিশের অন্যতম শীর্ষপদ থেকে মুরলিধর শর্মাকে সরানো এবং সিআইডি-র শীর্ষপদ থেকে রাজারাম রাজশেখরনকে সরানোও তারই অঙ্গ। তবে প্রশাসনেরই অন্য একাংশের দাবি, এর সঙ্গে কোনও সমীকরণের যোগাযোগ নেই। আধিকারিকদের বদলি প্রশাসনকে আরও জোরদার করার স্বার্থেই করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে।
কর্মিবর্গ এবং প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের সচিব এবং প্রেসিডেন্সি ডিভিশনের বিভাগীয় কমিশনার জগদীশপ্রসাদ মিনা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিব হিসাবে কাজ করবেন। এত দিন অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে কারা প্রশাসন দফতরের কাজ সামলেছেন মিনা।
প্রশাসনিক স্তরে আরও কিছু রদবদলের জন্য নবান্নের প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রদবদলের তালিকা দেখে অনেকে মনে করছেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও ‘বিশেষ নজর’ দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের অন্দরে তাঁর ‘আস্থাভাজন’ বলে পরিচিত বিবেক কুমারকে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের যুগ্মসচিব পদে পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, রদবদলের পর দায়িত্ব বেড়েছে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব রোশনি সেনের। ১৯৯৩ ব্যাচের এই আইএএস আধিকারিক মৎস্য, জলজপ্রাণী বিষয়ক দফতরের পাশাপাশি পরিবেশ দফতরের দায়িত্বভার সামলাবেন। ২০০৬ সালের আইএএস ইয়েলুচুরি রত্নকারা রাও স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিব ছিলেন। তাঁকে অপ্রচলিত এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি দফতরের সচিব করা হচ্ছে। অভিষেক তিওয়ারি স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের বিশেষ সচিব ছিলেন। তাঁকে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর করা হয়েছে। পর্যটন সংক্রান্ত বিভাগের ডিরেক্টরও করা হয়েছে তাঁকে। শশাঙ্ক শেঠিকে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে সরিয়ে হিডকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর করা হয়েছে।