(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার আরামবাগ এবং শনিবার কৃষ্ণনগরের পর আগামী ৬ মার্চ বারাসতের কাছারি ময়দানে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৃণমূলের তরফে শুক্রবারেই জানিয়ে দেওয়া হল, মোদীর ওই সভার পর দিনই কলকাতায় মিছিলে পা মেলাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারাসতে মহিলা তৃণমূলের মিছিলে হাঁটবেন ‘দিদি’। আন্তর্জাতিক নারীদিবস ৮ মার্চ। সেই উপলক্ষেই ৭ তারিখ মিছিল করবেন মমতা।
কেন নারীদিবসের এক দিন আগেই সাংগঠনিক কর্মসূচিতে মিছিলে পা মেলাচ্ছেন মমতা? কারণ, পোড়খাওয়া রাজনীতিক মমতা জানেন, ৬ মার্চেও প্রধানমন্ত্রী সন্দেশখালি নিয়ে আগ্রাসী আক্রমণ করতে পারেন তৃণমূল তথা মমতার সরকারের বিরুদ্ধে। ঠিক তার পরের দিনই পাল্টা জবাব দিতে রাস্তায় নামছেন তৃণমূলনেত্রী।
শুক্রবার আরামবাগের সভাতেও মোদীর বক্তৃতার অধিকাংশ জুড়েই ছিল সন্দেশখালি, সেখানকার মহিলাদের উপর অত্যাচার এবং সেই বাবদে তৃণমূলের তীব্র সমালোচনা। শনিবার কৃষ্ণনগরের সভাতেও তা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আরামবাগের সভা থেকেই প্রধানমন্ত্রী লোকসভা নির্বাচনে মমতা এবং তাঁর সরকার তথা দলকে আক্রমণের অভিমুখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তা হল, দুর্নীতি এবং সন্দেশখালির উদাহরণ দিয়ে নারীনির্যাতন। আরামবাগের সভায় বিজেপি প্রচুর মহিলাকে সংগঠিত করে নিয়ে এসেছিল প্রধানমন্ত্রীর সভায়। মোদী তাঁর ভাষণে সেই মহিলাদের উদ্দেশেও কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আধ ঘণ্টার বক্তৃতার অনেকটাই জুড়ে ছিল পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের উপর আক্রমণ। মোদী বলেছেন, ‘‘(মহিলাদের উপর) চোটের জবাব ভোটে দিন!’’
ঘটনাচক্রে, বারাসত সন্দেশখালির আরও কাছে এবং একই জেলায়। রাজ্য বিজেপির পরিকল্পনা, সন্দেশখালির নির্যাতিতা মহিলাদের কাউকে কাউকে মোদীর মঞ্চে নিয়ে গিয়ে হাজির করানোর। লোকসভা ভোটে বিজেপি তথা বিরোধীরা যে সন্দেশখালি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘নারী বিরোধী’ ধারণা নির্মাণ করতে চাইছে, তা মমতা বুঝতে পারছেন। সেই কারণেই সময় নষ্ট না করে মমতা মোদীর সভার পরদিনই কলকাতায় মিছিলে নামতে চলেছেন।
৭ মার্চের মিছিলের স্লোগানও চূড়ান্ত করে ফেলেছে শাসকদল: ‘মহিলাদের অধিকার, আমাদের অঙ্গীকার’। গত দেড় দশক ধরে একের পর এক নির্বাচনে মহিলা ভোট তৃণমূলের পুঁজিতে পরিণত হয়েছে। মোদী সেটাতেই আঘাত করতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন শাসক শিবিরের অনেক নেতা। রাস্তায় নেমে তারই মোকাবিলা করতে চান মমতা।