মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর জনসভা করার কথা কোচবিহারে। তার পরের দিন, মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তরের এই দুই জেলায় প্রায় নিরঙ্কুশ জয় পেলেও গত লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার— দু’টি লোকসভাতেই বিজেপির কাছে পরাস্ত হয় তৃণমূল। বিধানসভা নির্বাচনেও সারা রাজ্যে ঘাসফুল ঝড়ের মধ্যে এই দুই জেলায় মাথা তুলেছিল পদ্মফুল। আবার এই দু’টি জেলাতেই দলের ‘গোষ্ঠী কোন্দল’ চিন্তায় ফেলেছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে। পঞ্চায়েত ভোট যখন শিয়রে, সেই সময়েই ওই দুই জেলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কী বার্তা দেন, সে দিকে নজর রয়েছে সকলেরই।
তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের তরফে জানা গিয়েছে, সোমবার কোচবিহারের চান্দামারীতে প্রাণনাথ হাই স্কুলের মাঠে জনসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার বিকেলেই তাঁর কোচবিহার পৌঁছে যাওয়ার কথা। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির মালবাজারে জনসভা করবেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলা নেতৃত্বের তরফে জানা গিয়েছে, মাল শহর এলাকার বাইরে ডামডিম এলাকায় দলীয় জনসভাটি হবে। ইতিমধ্যেই কোচবিহার জেলায় সভার মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবার সকাল ১১টায় জনসভা থেকে বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “সোমবার সকাল ১১টা থেকে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই জনসভায় কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হবে।”
ইতিমধ্যেই কোচবিহার জেলায় তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার চালিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বাবুল সুপ্রিয়-সহ অন্য তৃণমূল নেতারা। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা কোচবিহার জেলা। প্রধানত, তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠী যুব এবং মাদারের মধ্যে পঞ্চায়েত দখল নিয়ে ছিল লড়াই। তৃণমূল মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল যুব তৃণমূল। যদিও পরবর্তীতে জয়ী নির্দল প্রার্থীরা আবার দলে ফিরে আসেন। কোচবিহার জেলায় ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২৭টি দখল করে তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলায় ভরাডুবি হয়েছিল বাংলার শাসকদলের। তাই এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই দলের গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে জেলায় ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীদের একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়ে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, তার পরেও কোচবিহার জেলার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূল কর্মীরাই।