(বাঁ দিকে) তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্র এবং তাঁর স্বামী সৌম্য রায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রের স্বামী আইপিএস সৌম্য রায়ের বদলি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেউ বিধায়ক হলে তাঁর স্বামী অফিসার থাকতে পারবেন না কেন এই প্রশ্ন তোলেন তিনি। লাভলির স্বামীকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কেন্দ্রের ক’জন অফিসারকে এই সব কারণে সরানো হয়েছে?’’
উত্তরবঙ্গে ঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি তদারকির জন্য মমতা এই মুহূর্তে জলপাইগুড়িতে আছেন। সেখান থেকেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে লাভলির স্বামীর বদলির প্রসঙ্গ ওঠে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘‘কেউ বিধায়ক হলে তাঁর স্বামী অফিসার থাকতে পারবেন না? এটা কোনও খাতায় লেখা আছে? আমি কমিশন নিয়ে কোনও কথা বলব না। আমি সুবিচারের কথা বলব। ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতর যা করছে, বিজেপির মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কত কেস? কোন কেসটা নেই? কতগুলির ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হয়েছে?’’
উল্লেখ্য, সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক লাভলি। তাঁর স্বামী সৌম্য রায় কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) পদে ছিলেন। তাঁকে মঙ্গলবার নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরানোর কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যকে বলা হয়েছে, ওই পদের জন্য তিনটি নতুন নাম পাঠাতে হবে। সৌম্যকে অ-নির্বাচনী কোনও পদে বদলি করতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকতে পারবেন না।
কমিশনের এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে ক্ষোভ চেপে রাখেননি মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আপনি চিকিৎসক, আপনার স্ত্রী ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না? স্ত্রী অধ্যাপক হলে তাঁর স্বামী ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না? এ আবার কী কথা? সৌম্য তো আইপিএসের চাকরি পেয়েছে বিয়ে করার অনেক আগে। বিজেপি যা বলবে তা-ই শুনতে হবে? বিজেপির দালালির জন্য একটা ভাঁওতাবাজ সরকার তৈরি হয়েছে। শুধু মিথ্যা কথা বলে। এটা তো রাজ্যের ভোট নয়। তা হলে রাজ্যের অফিসারকে কেন সরানো হচ্ছে?’’
উল্লেখ্য, এর আগেও নির্বাচনের আগে সৌম্যকে পুলিশের উচ্চ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর স্ত্রী লাভলি তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সৌম্য। বিরোধীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে বদলি করা হয়। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেও একই পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন।