(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিতিন গডকড়ী (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখে তাঁরই সতীর্থ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী দাবি করেছেন, জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহার করা হোক। বুধবার গডকড়ীর সেই চিঠির খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। বৃহস্পতিবার একই দাবি তুললেন তৃণমূলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিই নয়, মমতা কিছুটা হুঙ্কারের সুরেই বলেছেন, জিএসটি প্রত্যাহার না হলে রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন।
নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে মমতা লিখেছেন, ‘‘এই ক্ষেত্রে জিএসটি নেতিবাচক। তার কারণ, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’’ মমতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি এই জনবিরোধী জিএসটি প্রত্যাহার না করে তা হলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।’’
বুধবার গডকড়ীর চিঠি প্রকাশ্যে এলেও জানা গিয়েছে, গত ২৮ জুলাই নির্মলাকে সেই চিঠি লিখেছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী। তবে সেই দিন তা জানাজানি হয়নি। উল্লেখ্য, ২৯ জুুলাই সেই দাবিতেই রাজ্যসভায় সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার অধিবেশনে এই নিয়ে সরব হন তৃণমূলের সাংসদ দোলা সেন। দোলা সরাসরি গডকড়ীকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি গড়করীর প্রস্তাবকে সমর্থন করি। হয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তা মানুন, না হলে পদত্যাগ করুন।’’
Our demand to Government of India is to roll back GST from life insurance and medical insurance premium on grounds of people's health imperatives.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 1, 2024
This GST is bad because it adversely affects the people's ability to take care of their basic vital needs.
If Government of India…
বর্তমান কর কাঠামোয় জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়ামে ১৮ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়। গডকড়ী মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বিজেপি সাংসদ। সেখানকার এলআইসি কর্মী সংগঠন এ বিষয়ে তাঁকে স্মারকলিপি দিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যেন এ বিষয়ে তৎপর হন। বিমা কর্মী সংগঠনের সেই দাবিদাওয়ার কথা উল্লেখ করেই নির্মলাকে চিঠি লিখেছেন গডকড়ী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, জীবন এবং স্বাস্থ্য বিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি এক দিকে যেমন বিমাক্ষেত্রকে সঙ্কুচিত করছে, তেমনই প্রবীণ নাগরিকদের সমস্যার মুখে ফেলছে। গড়কড়ী এ-ও উল্লেখ করেছেন, জীবনবিমা এবং স্বাস্থ্যবিমা— এই দু’টি ক্ষেত্রই স্পর্শকাতর। এ দু’টির কর কাঠামো পুনর্গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা যায় কি না, সে ব্যাপারে আর্জি জানিয়েছেন গডকড়ী।
নরেন্দ্র মোদী জমানাতেই ‘এক দেশ-এক কর’ ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির হাত ধরে সূচনা হয়েছিল জিএসটি-র। গোড়া থেকেই জিএসটি ব্যবস্থার সমালোচক মমতা। কেন্দ্র জিএসটি কাউন্সিলও তৈরি করেছে। যারা মূলত কর কাঠামোর বিষয়ে সরকারের কাছে বিভিন্ন সুপারিশ করে। গত ২২ জুন শেষ বার জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছিল। অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে ফের বৈঠকে বসার কথা জিএসটি কাউন্সিলের। সেই বৈঠকে গডকড়ীর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে খবর। তার আগে কেন্দ্রের উপর চাপ বৃদ্ধির পথে হাঁটতে শুরু করল তৃণমূল।