(বাঁ দিক থেকে) সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শাহরুখ খান। — ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী মঞ্চেই এই ঘোষণা করেন মমতা। সেখানে উপস্থিত সৌরভের হাতে সঙ্গে সঙ্গেই একটি চিঠি তুলে দেন মমতা। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে সরকারি ভাবে নিয়োগপত্র দেবেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। এটাও জানা গিয়েছে যে, সৌরভ এই দায়িত্ব পালনের জন্য রাজ্যের কোনও অর্থ নেবেন না। রাজ্যে বাম জমানায় কোনও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন না। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেই এই বিষয়ে প্রথম উদ্যোগী হন মমতা। প্রথম বার অভিনেতা শাহরুখ খানকে রাজ্যের দূত বানান তিনি। এ বার নিয়োগ করলেন সৌরভকে। তবে শাহরুখকে সরিয়ে সৌরভকে নিয়োগ করলেন কি না সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে কিছু জানা যায়নি। মমতাও এ দিন শাহরুখ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি। এর আগে তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দেবকে রাজ্যের পর্যটন অ্যাম্বাসাডর ঘোষণা করেছিলেন মমতা। তবে মঙ্গলবার মমতা যা বলেন তাতে রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসাবেই তিনি প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে বাছেন।
মমতার সঙ্গে সৌরভের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। নানা রাজনৈতিক জল্পনা তৈরি হলেও মুখ্যমন্ত্রী ও মহারাজের মধ্যে কখনও দূরত্ব তৈরি হতে দেখা যায়নি। গত সেপ্টেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন সফরের সময়ে মাদ্রিদ গিয়েছিলেন সৌরভও। স্পেনের বণিক মহলের সামনে বাংলার শিল্প সম্ভাবনা তুলে ধরেন তিনি। পাশাপাশি সৌরভ বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়েই ঘোষণা করেছিলেন, মেদিনীপুরে ইস্পাত কারখানা গড়ে তুলতে বিনিয়োগ করবেন তিনি। মঙ্গলবার বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সৌরভ স্পেনের ঘোষণা নিয়ে অবশ্য নতুন করে কিছু বলেননি। তবে নিজের বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। সৌরভ বলেন, ‘‘আমায় টেলিভিশনে দেখলেই উনি এসএমএস করেন। আমি এসএমএস করলে এক মিনিটে জবাব দেন। এ রকম খুব কম হয় যে দিদি এসএমএসের জবাব দিতে দেরি করেন।’’ সৌরভ বোঝাতে চান ব্যক্তিগত স্তরে মমতা এতটাই যত্নশীল।তা ছাড়া বিসিসিআই-এর দায়িত্বভার কাঁধের উপর না থাকায় সৌরভ হয়তো কিছু বাড়তি সময়ও বার করতে পারবেন এখন। রাজ্যের শিল্প নিয়ে সৌরভ এ-ও বলেন, ‘‘রাজ্যে সত্যিই বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আপনারা আসুন।’’
সৌরভের বক্তৃতার পরে আরও অনেকটা সময়ে গড়িয়ে যায় সম্মেলনে। মুকেশ অম্বানী আগামী তিন বছরে রাজ্যে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ঘোষণা করেন। এর পরে মমতা তাঁর বক্তব্য রাখেন। রাজ্যের যাবতীয় শিল্প সম্ভাবনা জানানোর পরে বলেন, ‘‘আমি এখন একটা ঘোষণা করতে চাই।’’ সৌরভের নাম ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসাবে ঘোষণা করতে করতেই ডেকে নেন দাদাকে। সঙ্গে বলেন, ‘‘আমি না শুনতে চাই না। সব কিছুকে পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে।’’ সৌরভ কাছে আসতেই মমতা তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন।