দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ানে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানে চলছে উদ্ধারকাজ। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।
ডিসেম্বর মাস শেষ হতে এখনও দু’দিন বাকি। কিন্তু বছরের শেষ মাসে মাত্র ২৯ দিনেই ছ’টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটল বিশ্বের নানা প্রান্তে। এই বিমান দুর্ঘটনাগুলিতে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৬ জন। রবিবারই দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ানে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জেজু এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান। এই বিমান দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৭৯ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে একই মাসে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুর্ঘটনার মুখে পড়ে আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্সের ইআরজে-১৯০ বিমান। সেটির গন্তব্য ছিল রাশিয়া। স্থানীয় সময় ভোর ৩টে ৫৫ মিনিটে বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়া প্রদেশের গ্রজ়নির উদ্দেশে সেটি রওনা দিয়েছিল। কাজ়াখস্তানের আকতুতে কাসপিয়ান সাগরের পূর্ব উপকূলে আচমকা বিমানটি ভেঙে পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে সেটির পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কাজ়াখস্তানের বিমানবন্দরে তার জরুরি অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু অবতরণের আগে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। রুশ সংবাদমাধ্যমের তরফে দাবি করা হয়, একঝাঁক পাখির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তবে এখনও দুর্ঘটনার কারণ নিশ্চিত করে জানানো হয়নি।
গত রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ ব্রাজ়িলের পর্যটন শহর গ্রামাদোতে ১০ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ে একটি বিমান। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় বিমানের সব যাত্রীর। যাত্রিবাহী বিমানটি প্রথমে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাড়ির চিমনিতে ধাক্কা মারে। এর পর আরও একটি বাড়ির দোতলায় গিয়ে দ্বিতীয় বার ধাক্কা খায় সেটি। শেষমেশ বিমানটি একটি দোকানের উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। মুহূর্তে আগুন ধরে যায় সেটিতে। একই দিনে পাপুয়া নিউ গিনিতে একটি বিমান ভেঙে পড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। কী কারণে সেটি ভেঙে পড়ল, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
১৮ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার সান ফার্নানদো বিমানবন্দরের কাছে একটি বিমান গাছে এবং পাঁচিলে ধাক্কা খায়। তার পরেই আগুন লেগে যায় বিমানটিতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই বিমানের দুই পাইলটের। ১৭ ডিসেম্বর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের হনুলুলু বিমানবন্দরের কাছে একটি পণ্যবাহী বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে। কী কারণে বিমানটি ভেঙে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে পাইলটদের প্রশিক্ষণ চলার সময়ে বিমানটি ভেঙে পড়ে।
বিমানগুলি ভেঙে পড়ার নেপথ্যে কোথাও প্রতিকূল আবহাওয়া, কোথাও প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে ধন্দ রইলেও সকলেই একটি বিষয়ে একমত যে, ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আরও আঁটসাঁট সুরক্ষাবিধি প্রণয়ন করা প্রয়োজন।