মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পানীয় জল, আবাসন, পরিচ্ছন্নতা— এই তিন সূচকে রাজ্যের কোন পুরসভা ভাল জায়গায় রয়েছে, কোন পুরসভা খারাপ, তার তালিকা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন সভাঘরে পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান, পুরনিগমগুলির মেয়র এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকে রাজ্যের পুর পরিষেবা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি। মমতার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে বাঘা বাঘা মন্ত্রী, বিধায়কদেরও। পাশাপাশিই, সোমবারের বৈঠক থেকে একটি তালিকা পড়েন মমতা। তাতে তিন সূচকে কোন পুরসভা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তা জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা জানিয়েছেন পানীয় জলের ক্ষেত্রে ভাল পুরসভা উলুবেড়িয়া, হালিশহর, বৈদ্যবাটি, কলকাতা এবং বাঁকুড়া। খারাপের তালিকায় রয়েছে, আলিপুরদুয়ার, শিলিগুড়ি, বালি, বরাহনগর, শান্তিপুর। কয়েক সপ্তাহ আগেই শিলিগুড়িতে পানীয় জলে দূষণ ধরা পড়েছিল। জলের পাউচের দেদার কালোবাজারিও শুরু হয়েছিল উত্তরবঙ্গের এই শহরে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে, মেয়র গৌতম দেব শিলিগুড়িবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘তিন দিন পুরসভার জল খাবেন না।’’ যা নিয়ে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক বিক্ষোভও তুঙ্গে ওঠে। পরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রীর মার্কশিটে পানীয় জলের সূচকে শিলিগুড়ি খারাপই রয়েছে।
আবাসনের সূচকে সেরা পুরসভার তালিকায় রয়েছে, উলুবেড়িয়া, জঙ্গিপুর, হাবরা, কৃষ্ণনগর, মধ্যমগ্রাম। পর পর দু’টি সূচকে উলুবেড়িয়ার নাম দেখে মমতা বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া পারলে বাকিরা পারে না কেন? এটা তো মডেল পুরসভা হওয়া উচিত।’’ আবাসনের সূচকে খারাপ জায়গায় রয়েছে, বিধাননগর, আসানসোল, কাঁথি এবং রায়গঞ্জ। এই তালিকা পড়ার পরেই মমতা বলেন, ‘‘সব নিজেদের সম্পত্তি পেয়ে গিয়েছে। আমি কিন্তু ভেঙে দেব!’’
পরিচ্ছন্নতার নিরিখে ভাল জায়গায় রয়েছে কলকাতা, বসিরহাট, বৈদ্যবাটি, উত্তরপাড়া, উত্তর দমদম এবং নবদ্বীপ। আর খারাপের তালিকায় রয়েছে কাঁথি, ডালখোলা, পানিহাটি, সিউড়ি।
পুরসভার করবৃদ্ধি নিয়েও সোমবারের বৈঠক থেকে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে কোচবিহার পুরসভার নামোল্লেখ করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রবি ঘোষের ইচ্ছা হল আর কোচবিহারে কর বাড়িয়ে দিল! তুমি কে ভাই কর বাড়ানোর? রাজ্য সরকারের অনুমতি না নিয়ে কোনও পুরসভা কর বাড়াতে পারবে না।’’