Locket chatterjee

লোকসভার ভাষণে দলের অন্য সকলের আগে, বিজেপি-তে ক্রমশ গুরুত্ব বাড়ছে বাংলার লকেটের

বিজেপি-তে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন দলে তাঁর সতীর্থদের একাংশ। সত্যিই কি তাঁর গুরুত্ব বাড়ছে?

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৪২
বুধবার ফের লোকসভার অধিবেশন শুরু হলে যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকেই শুরু করবেন লকেট।

বুধবার ফের লোকসভার অধিবেশন শুরু হলে যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকেই শুরু করবেন লকেট। ছবি: পিটিআই।

প্রথমে মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। পরে রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। তার পর রাজ্য জুড়ে কৃষক সুরক্ষা অভিযানের নেতৃত্ব। এর পর ডুমুরজলায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের ‘যোগদান’ মঞ্চ পরিচালনার দায়িত্ব। মঙ্গলবার সংসদে বাজেট নিয়ে আলোচনায় সরকার পক্ষের প্রথম বক্তাও তিনি। বিজেপি-তে হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন দলে তাঁর সতীর্থদের একাংশ। সত্যিই কি তাঁর গুরুত্ব বাড়ছে? মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লকেট যদিও বললেন, ‘‘আমি যে দিন থেকে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছি, নেতৃত্ব আমায় যা নির্দেশ দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছি। আজ যে সুযোগ পেলাম, সেটাও আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি। নতুন নতুন শেখার সুযোগ বাড়ছে। নিজের দায়িত্বও বেড়ে যাচ্ছে।’’

সংসদের রীতি অনুযায়ী, বাজেট পেশের পর তা নিয়ে আলোচনা শুরুর প্রথম বক্তা হন সরকার পক্ষের কোনও এক জন সাংসদ। ‘নীল বাড়ি দখল’-এর লক্ষ্যে বাংলার বিজেপি যখন বড় মাপের লড়াই দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে, সেই সময় এই দায়িত্ব পেলেন বাংলার সাংসদ লকেট। তবে মঙ্গলবার লকেট বক্তৃতা শুরু করলেও তা শেষ করতে পারেননি। বিরোধীদের হইচইয়ে তাঁকে থেমে যেতে হয় এবং সংসদ মুলতুবি হয়ে যায়। বুধবার ফের লোকসভার অধিবেশন শুরু হলে যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকেই শুরু করবেন লকেট।

Advertisement

বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর লকেট বীরভূমের ময়ূরেশ্বর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন পাঁচ বছর আগে। জিততে পারেননি। তার পরে মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী করা হয় তাঁকে। এর পর গত লোকসভা নির্বাচনে হুগলির মতো একটা কঠিন আসন থেকে জিতে সাংসদ হন তিনি। লোকসভায় বিভিন্ন অধিবেশনে নিয়মিত অংশ নিতে থাকেন তিনি। নিজের এলাকার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়েও তাঁকে সরব হতে দেখা যায় লোকভায়। তাঁর সতীর্থদের একাংশের মতে, সংসদের বাইরে-ভিতরে লড়াকু এবং পরিশ্রমী নেত্রী হিসেবে লকেটের পরিচিতি ধীরে ধীরে তৈরি হয়ে যায়।

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন বিজেপি-র রাজ্য কমিটি যখন ঢেলে সাজানো হল, তখন অন্যতম সাধারণ সম্পাদক করা হয় দক্ষিণেশ্বরের পুরোহিত পরিবারের সন্তান লকেটকে। এ রাজ্যে ‘শিল্প বনাম কৃষি’র যে বিতর্ক সিঙ্গুরকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল, সেই সিঙ্গুরের মাটি গেরুয়া শিবিরের জন্য শক্ত করার দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে সিঙ্গুর বিধানসভায় ১০ হাজারেরেও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেই সময় থেকেই সিঙ্গুরের মাটি আঁকড়ে রয়েছেন লকেট। কৃষকদের সঙ্গে চাটাই বৈঠক করেন নিয়মিত। সিঙ্গুরে টাটাদের যাতে ফেরানো যায়, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের কাছে সেই অনুরোধও করেছেন লকেট। রাজ্যে কৃষক সুরক্ষা অভিযানের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা যখন রাজ্য সফরে এলেন, তাঁর ‘মুষ্ঠি ভিক্ষা’ অভিযানে সব সময়েই নড্ডার পাশে দেখা গিয়েছে লকেটকে। কারণ, ওই অভিযানের প্রধানও তিনি। সম্প্রতি ডুমুরজলার সভা পরিচালনার দায়িত্ব ছিল লকেটের উপরে। ওই সভায় অমিত শাহের আসার কথা থাকলেও তিনি শেষ পর্যন্ত আসেননি। এসেছিলেন স্মৃতি ইরানি। এর পর লোকসভায় বাজেট আলোচনার প্রথম বক্তার ভূমিকায়।

সংসদীয় রাজনীতিতে লকেটের যে উত্থান ঘটেছে, সেই উত্থান কিন্তু টলিউডে তাঁর সহকর্মী এবং রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে ঘটেনি বলেই মনে করছে বিজেপি-রই একাংশ। লকেট যদিও সে সব তুলনার মধ্যে যেতে চান না।

Advertisement
আরও পড়ুন