বিধানসভায় বাজেট পেশ করছেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র ।
বাজেট শেষে সাংবাদিক বৈঠক শুভেন্দু অধিকারীর। রাজ্য বাজেট প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘আতঙ্কিত হয়ে এই বাজেট পেশ করেছে রাজ্য সরকার।’’ ভোটপ্রচারের উদ্দেশে এই বাজেট পেশ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বাজেটে চারটি নতুন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (সুপার ক্রিটিকাল থার্মাল পাওয়ার ইউনিট) তৈরির কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। বরাদ্দ ১০০ কোটি।
সেতু তৈরি হবে গঙ্গা নদীর উপর। মুড়িগঙ্গা থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত ৩.১ কিলোমিটারের সেতু তৈরি করা হবে। নাম দেওয়া হবে ‘গঙ্গাসাগর সেতু’। দামোদরের উপর তৈরি হবে ‘শিল্পসেতু’।
নিউ টাউন ও বিমানবন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে ইএম বাইপাসে সাত কিলোমিটারের উড়ালপুল তৈরির ঘোষণা। তিন বছরের মধ্যে সেই প্রকল্প শেষ করা হবে। প্রথম বছরের জন্য বরাদ্দ থাকবে ১৫০ কোটি টাকা।
বাংলায় বেকারত্বের হার দেশের তুলনায় ৩ শতাংশ কম। বাজেট পেশের সময় জানালেন চন্দ্রিমা।
বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের সুবিধা পাবেন যুবক-যুবতীরা। প্রশিক্ষণের জন্য মাসে মাসিক দেড়-দু’হাজার টাকা দেওয়া হবে। প্রতি বছর ১ লক্ষ যুবক-যুবতী এতে লাভবান হবেন। এর জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হচ্ছে বলেও ঘোষণা রাজ্য বাজেটে।
বাজেটে রাজ্যের পড়ুয়াদের জন্য নতুন ঘোষণা তৃণমূল সরকারের। মাধ্যমিক পাশের পরে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে ভর্তি হলেই স্মার্টফোন পাবে বলে জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা। এর জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে ৯০০ কোটি টাকা।
রাজ্যের পাঁচ লক্ষ বেকার যুবক-যুবতীকে রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ করা হবে বলে ঘোষণা করা হল রাজ্য বাজেটে।
রাজ্যের দারিদ্রের হার কমছে বলে বাজেট পেশ করার সময় জানালেন চন্দ্রিমা। তাঁর দাবি, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক বছর আগে, ৫৭.৬০ শতাংশ রাজ্যবাসী দারিদ্রসীমার নীচে ছিলেন। তৃণমূল সরকার আসার পর ২ কোটির বেশি মানুষের জীবিকা সংস্থান হয়েছে। ফলে দারিদ্রসীমার নীচের মানুষের সংখ্যা কমে ৮.৬০ শতাংশ হয়েছে বলে জানালেন অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী।
বাজেটে সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ এবং গ্রিন পুলিশদের ভাতা বাড়ল ১০০০ টাকা। এর জন্য ১৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। পাশাপাশি এখন থেকে রাজ্য পুলিশের ২০ শতাংশ চাকরি সংরক্ষিত থাকবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য, যা এত দিন ১০ শতাংশ ছিল। ঘোষণা করলেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বাজেট পড়ার মধ্যে ফের বিজেপি পরিষদীয় দল হট্টগোল শুরু করে। ফের উঠে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা। দাঁড়িয়ে বিজেপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, "আমাদের বাজেট পেশ করতে দিন। তার পর আপনারা সমালোচনা করুন। আর যদি ভাবেন, বাজেট পেশই করতে দেবেন না, তা হলে আমরাও সংসদে বাজেট পেশ করতে দেব না।"
বাজেটে নতুন কর্মশ্রী প্রকল্পে ৫০ দিন করে কাজ দেওয়ার ঘোষণা করল রাজ্য। ১০০ দিনের প্রকল্পের পাল্টা এই প্রকল্পের ঘোষণা করা হল। চলতি বছরের মে মাস থেকে কার্যকর হবে ‘কর্মশ্রূী’ প্রকল্প । রাজ্যের প্রতিটি জব কার্ড হোল্ডার এই প্রকল্পের আওতায় কাজের সুযোগ পাবেন।
উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মৎস্যজীবীদের জন্য বাজেটে সমুদ্রসাথী প্রকল্পের ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। সেই প্রকল্পে বর্ষার দু’মাস ভাতা বাবদ মৎসজীবীদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। বরাদ্দ করা হবে ২০০ কোটি টাকা। উপকৃত হবেন দু’লক্ষ মৎস্যজীবী। ঘোষণা করলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা।
বাজেটে, পথশ্রী প্রকল্পের জন্যও অর্থ বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তাকে উন্নত করা হবে। বরাদ্দ করা হচ্ছে ৩,৮৬৮ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনা হল পরিযায়ী শ্রমিকদের। রাজ্যের যে শ্রমিকরা বাইরে আছেন, তাঁরা সেখানকার হাসপাতালেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন বলে ঘোষণা করা হল বাজেটে।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আরও চার শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করা হল। বৃহস্পতিবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সে কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে একই বছরে দু’বার ডিএ বৃদ্ধি করল রাজ্য সরকার। বাজেট অধিবেশনে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা জানান, আরও চার শতাংশ হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বৃদ্ধি করা হবে। গত জানুয়ারি মাসেও ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সে বারও চার শতাংশ ডিএ বেড়েছিল।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ পান। বৃহস্পতিবারের ঘোষণার পর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বেড়ে হল ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ, এখনও ডিএ-র ক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্য ফারাক থাকছে ৩২ শতাংশ।
চন্দ্রিমার বাজেট পেশের মাঝেই হট্টগোল শুরু করেন বিরোধীরা। তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও বিরোধীরা না থামলে উঠে বলতে শুরু করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘এটা বিজেপির পার্টি অফিস না। এটা বিধানসভা। বাংলার মানুষ দেখুক এরা কী ভাবে মানুষকে অপমান করছে।’’
মমতার বক্তৃতার সময় ‘চোর চোর’ স্লোগান দেন বিজেপি বিধায়করা। বাজেট বক্তৃতায় কেন কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ? প্রশ্ন তুললেন বিরোধী দলনেতা।
বাজেটে ১০০ দিনের কাজে শ্রমিকদের বকেয়া বাবদ ৩৭০০ কোটি বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। ২১ ফেব্রুয়ারি মাসে ২১ লক্ষ মানুষকে ১০০ দিনের কাজের টাকা হিসাবে ওই অর্থ দেওয়া হবে।
এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা না দেওয়া হলে, মে মাসে রাজ্য ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির টাকা দিয়ে দেবে বলেও ঘোষণা সরকারের।
বাজেটে লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে বড় ঘোষণা করল রাজ্য। বাড়ানো হচ্ছে লক্ষ্মীর ভান্ডারের বরাদ্দ। সাধারণ মহিলাদের ১০০০ টাকা করে ও তফসিলি জাতি-জনজাতিভুক্তদের ১২০০ টাকা করে দেওয়া হবে।
জনমুখী উন্নয়নের বাজেট, বিশেষভাবে লক্ষ্মীর ভান্ডার দ্বিগুণ করার মত ঐতিহাসিক পদক্ষেপের জন্য মাননীয়া @MamataOfficial সরকারকে জানাই
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) February 8, 2024
আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। বাংলার সামগ্রিক উন্নয়ন এই বাজেটে ত্বরান্বিত হবে। এই রাজ্যের অর্থনীতি ও জনজীবনের মান আরও উন্নত হবে।
জয় বাংলা।
লোকসভা ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার বাজেটে এই প্রস্তাব পেশ হয়েছে বিধানসভায়। সংশ্লিষ্ট সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে ২ কোটি ১১ লক্ষ মহিলা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে সরকার। বাজেট পেশের সময় চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আমাদের মা-বোনেদের হাত শক্ত করার জন্য এই মা-মাটি-মানুষের সরকার আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে তফসিলি জাতি এবং জনজাতির শ্রেণির জন্য আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি করে মাসিক ১,২০০ টাকা এবং অন্যদের জন্য এই সহায়তা বৃদ্ধি করে মাসিক ১০০০ টাকা হবে।’’
বাজেট পেশের সময় বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি বিধায়করা।
রাজ্য সঙ্গীত দিয়ে বিধানসভায় শুরু হল বাজেট অধিবেশন। পাল্টা জাতীয় সঙ্গীত বিজেপি বিধায়কদের। বাজেট পেশের আগেই উত্তাপ বিধানসভায়। অধিবেশনের শুরুতেই সঙ্গীত নিয়ে তরজা। বিজেপির কোলাহল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত হয় শেষে। এরা নোংরা করল।’’
চোখ থাকবে ভোট-বছরে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী-সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে বরাদ্দের উপরে। আতশকাচের তলায় থাকবে পুঞ্জীভূত ঋণ এবং রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) নিরিখে রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণও। মোটের উপরে, বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পে বরাদ্দ এবং ঘাটতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই রাজ্য বাজেটের (২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের) বড় চ্যালেঞ্জ।
একশো দিনের কাজে এক বছরেরও বেশি কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ থাকার মোকাবিলায় তার শ্রমিকদের (মূলত অদক্ষ) বকেয়া মজুরি রাজ্যই দেবে বলে ঘোষণা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। হিসাব বলছে, সেই প্রতিশ্রুতি মিলিয়ে অদক্ষ শ্রমিকদের পাওনা মেটাতেই লাগবে অন্তত ৩০০০ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় দুপুর তিনটে নাগাদ রাজ্য বাজেট পেশ করবেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার, পড়ুয়া ঋণ-কার্ডের পাশাপাশি নতুন রূপে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। ভোট পরবর্তী বাজেটে তার প্রতিফলনও দেখা গিয়েছিল। প্রশাসনিক মহলের সূত্রে খবর, এ বছরও তেমনই দু’টি প্রকল্প নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।