(বাঁ দিক থেকে) রানাঘাট দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী, বাগদার জয়ী প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর, মানিকতলার তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডে এবং রায়গঞ্জের প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২০২১ সালে জেতা তিন কেন্দ্র উপনির্বাচনে হারাল বিজেপি। আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের বিধায়ক সংখ্যা আরও কমে গেল।
পুলিশি নিরাপত্তায় গণনাকেন্দ্র ছেড়েছেন বাগদার বিজেপি প্রার্থী বিনয় বিশ্বাস। যাওয়ার সময়ে তাঁকে ঘিরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তিনি বলেছেন, ‘‘এটা আমাদের জেতা আসন ছিল। সুস্থ ভাবে ভোট হলে এখানে আমরা জিততাম। জেতার পর এই ধরনের আচরণ আমরা কখনও করি না।’’
মানিকতলায় ৬২ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছে তৃণমূল। প্রয়াত সাধন পাণ্ডের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডে ওই কেন্দ্রের বিধায়ক হতে চলেছেন। তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ৬২,৩১২।
মানিকতলায় জয় নিশ্চিত হতেই বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘কল্যাণ চৌবে যত ভোটে হারবেন, ততগুলি রসগোল্লা ওঁর বাড়িতে পাঠাব। বাম জমানার থেকে ভাল আছেন বাংলার মানুষ। বিজেপির প্রতি তাঁদের আস্থা নেই। ভুলকে ভুল বলে স্বীকার করছে। তাই মানুষের আস্থা রয়েছে।’’
মানিকতলাতেও জিতে গেল তৃণমূল। বিধায়ক হচ্ছেন প্রয়াত সাধন পাণ্ডের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডে।
মানিকতলায় ১১ রাউন্ড গণনার শেষে প্রায় ৩৮ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে তৃণমূল।
রানাঘাট দক্ষিণে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর জয়ের ব্যবধান ৩৯,০৪৮। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির মনোজ কুমার বিশ্বাস ।
মুকুটমণি জয়ের পর বলেন, ‘‘বিজেপি মানুষের খবর রাখে না। আমোদে ব্যস্ত। পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের কথা বিজেপি ভাবে না। মানুষ সেটা বুঝে গিয়েছে। তাই আজকের এই ফল।’’
রানাঘাট দক্ষিণেও জিতে গেল তৃণমূল। সরকারি ঘোষণা এখনও হয়নি। তবে গণনার শেষে প্রায় ৩৪ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন মুকুটমণি অধিকারী। তাঁর জয়ও প্রায় নিশ্চিত।
রায়গঞ্জের পর বাগদাতেও জিতল তৃণমূল। চলতি বিধানসভায় রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হতে চলেছেন মতুয়া পরিবারের সদস্য এবং তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর। তাঁর বয়স ২৫ বছর। ১৩ বছর পর এই কেন্দ্রে ফিরল তৃণমূল। মধুপর্ণার জয়ের ব্যবধান প্রায় ৩৪ হাজার।
রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে ৩৬ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে তৃণমূলের মুকুটমণি অধিকারী। গণনাকেন্দ্র ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন বিজেপি প্রার্থী মনোজকুমার বিশ্বাস। ওই তাঁকে ঘিরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশি নিরাপত্তায় তাঁকে গণনাকেন্দ্র থেকে বার করা হয়েছে।
রায়গঞ্জে জিতে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ উন্নয়নের নিরিখে ভোট দিয়েছেন। এটা জনাদেশ। আমি ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছি। মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’
লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ থেকে কৃষ্ণ কল্যাণীকেই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনি হেরে গিয়েছেন বিজেপির কার্তিক পালের কাছে। এর পর রায়গঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে আবার তাঁকেই টিকিট দেয় শাসকদল। এ বার তিনি জিতলেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও এই কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন কৃষ্ণ। তবে তখন তাঁর দল ছিল ভিন্ন। তিনি বিজেপির টিকিটে সে বার প্রায় ২১ হাজার ভোটে জিতেছিলেন।
বাগদায় তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর ১১ রাউন্ড গণনার শেষে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে।
রায়গঞ্জের উপনির্বাচনে জিতে গিয়েছে তৃণমূল। ১০ রাউন্ড গণনা হওয়ার কথা ছিল ওই কেন্দ্রে। ১০ রাউন্ড শেষে দেখা যায় তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী এগিয়ে ৪৯,৫৩৬ ভোটে। তাঁর জয় নিশ্চিত। কমিশন যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে জয় ঘোষণা করেনি। পোস্টাল ব্যালটের হিসাব অনুযায়ী, কৃষ্ণ কল্যাণীর ব্যবধান ৫০ হাজার ৭৭।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বাগদায় অষ্টম রাউন্ডের গণনা শেষ হয়েছে। তৃণমূল ১৮,৩৩৭ ভোটে এগিয়ে।
কলকাতার মানিকতলায় পাঁচ রাউন্ড গণনা হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডে ১৬,৮৩১ ভোটে এগিয়ে।
রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী ৭,২৬৬ ভোটে এগিয়ে আছেন। ওই কেন্দ্রে চতুর্থ রাউন্ডের গণনা শেষ হয়েছে বলে খবর কমিশন সূত্রে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বাগদায় সপ্তম রাউন্ডের গণনা শেষ হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর এগিয়ে আছেন ১৪,৫৫৩ ভোটে।
রায়গঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর ব্যবধান ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ষষ্ঠ রাউন্ড গণনার শেষে তৃণমূল এগিয়ে ৩৪,৬৮৭ ভোটে।